রক্তে লেখা ভালোবাসার চিঠি…নাবালিকা প্রেমিকার পরিবারে ‘অপমানিত’ হয়ে চরম সিদ্ধান্ত যুবকের!
প্রতিদিন | ২১ নভেম্বর ২০২৫
সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: চূড়ান্ত অপমান করেছে প্রেমিকার পরিবার! তাতে অপমানিত, লাঞ্ছিত হয়ে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপের যুবক। স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলের বারান্দায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের। তার আগে রক্ত দিয়ে প্রেমিকার উদ্দেশে নিজের ভালোবাসার কথা লিখেও রেখে গিয়েছেন প্রেমিক। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ সাগর থানা এলাকার বঙ্কিমনগরে। ছেলের এহেন মৃত্যুর জন্য প্রেমিকার পরিবারকে দায়ী করেছেন নিহতের আত্মীয়-পরিজনরা। তদন্তে নেমেছে সাগর থানার পুলিশ।
সাগরদ্বীপের বঙ্কিমনগরে ২১ বছরের যুবক বুদ্ধদেব জানা। তাঁর সঙ্গে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এলাকারই এক নাবালিকার। কিন্তু নাবালিকার পরিবারের কেউ এই সম্পর্ক মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। অভিযোগ, প্রেমিকার অভিভাবকরা বুদ্ধদেবকে দিন কয়েক আগে রাত দশটা নাগাদ বাড়িতে ডেকে পাঠান। এরপর তাঁকে চরম হেনস্তা করা হয়। প্রেমিকের বাবা স্বপন জানাকেও প্রেমিকার বাড়ির লোকজন নানাভাবে হেনস্তা করেন। তারপর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিল বুদ্ধদেব। পরিণতিতে সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বলে অভিযোগ। বুদ্ধদেবের কাকিমা আলপনা জানার অভিযোগ, বাড়িতে ডেকে ওই নাবালিকার আত্মীয়রা তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করে এবং একটি কাগজে এই মর্মে লিখিয়ে নেয়, ৫ লক্ষ টাকা প্রেমিকার কাছ থেকে নিয়েছে। আগামী ১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা ফেরত দিয়ে দেবে।
এরপর থেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল বুদ্ধদেব। বুধবার সন্ধে নাগাদ স্থানীয় বিশালাক্ষী অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃত্যুর আগে বুদ্ধদেব নিজের রক্ত দিয়ে প্রেমিকার উদ্দেশ্যে তাঁর গভীর ভালোবাসার কথা লিখে যান। বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়। এই ঘটনায় মৃতের পরিবার নাবালিকা প্রেমিকার বাবা ও প্রেমিকার দুই আত্মীয়ের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।
সাগরের এসডিপিও সুমনকান্তি ঘোষ জানান, একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে শুরু হয় তদন্ত। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে ওই নাবালিকা প্রেমিকার বাবা ও তাঁর দুই আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে ছেলেকে হারিয়ে গভীর শোকাহত মৃত যুবকের মা ও বাবা। তাঁরা ছেলের মৃত্যুর জন্য প্রেমিকার পরিবারের লোকজনকে দায়ী করে তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।