• রবীন্দ্রনাথকে সরাতে অনাস্থা? গুঞ্জন তৃণমূলে
    আনন্দবাজার | ২০ নভেম্বর ২০২৫
  • অনাস্থার আশঙ্কা সত্ত্বেও পুরপ্রধান পদ থেকে সরবেন না বলে জানিয়ে দিলেন কোচবিহার পুরসভার পুরপ্রধান তৃণমূলের রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। বুধবারও তিনি পুরসভায় বসে অফিস করেন। তিনি স্পষ্ট জানান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিলেই তবে তিনি পদত্যাগ করবেন। এ দিকে তাঁকে সরাতে অনাস্থা আনা হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছে তৃণমূলে।

    পুরসভা সূত্রে খবর, এ দিন পুরসভায় ব্যস্ততা ছিল তুঙ্গে। পড়ে থাকা কাজ দ্রুততার সঙ্গে শেষ করতে তৎপরতা দেখা যায়। একের পর এক ফাইল সই করেন রবীন্দ্রনাথ। কাজের গতি নিয়ে প্রশ্ন করলে পুরপ্রধান দাবি করেন, এটা তাঁর দৈনন্দিন কাজ। নাম প্রকাশে পুরসভার কর্মীদের কয়েক জন অবশ্য দাবি করেন, রবীন্দ্রনাথকে পুরপ্রধানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে তৃণমূলের একটি অংশে যে তৎপরতা শুরু হয়েছে তাতে অনাস্থার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সে কারণে কাজ ফেলে রাখতে চাইছেন না পুরপ্রধান। অনাস্থা নিয়ে প্রশ্ন করলে রবীন্দ্রনাথ অবশ্য এ দিনও স্পষ্ট বলেন, ‘‘অনাস্থা বা যা কিছুই আনা হোক মুখ্যমন্ত্রী না বলা পর্যন্ত পদত্যাগ করব না।’’ অভিজিৎ বা তৃণমূলের অন্য কোনও নেতৃত্ব ওই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

    তৃণমূল সূত্রের খবর, পুরপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক রবীন্দ্রনাথকে বার্তা পাঠান। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মতো তিনি ওই বার্তা পাঠিয়েছেন বলে অভিজিৎ আগেই সাংবাদিকদের জানান। তবে রবীন্দ্রনাথ অভিজিতের বার্তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য নেতৃত্ব নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করবেন না। এ দিনই রবীন্দ্রনাথের পদত্যাগের সাত দিনের সময়সীমা শেষ হয়েছে। এই অবস্থায় দলের মঙ্গলবার সংখ্যাগরিষ্ঠ পুরপ্রতিনিধিদের নিয়েবৈঠক করেন তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ ভৌমিক ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। ওই বৈঠকের পর গুঞ্জন ছড়ায়, রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হবে। যদিও কোচবিহার মহকুমা প্রশাসনের এক অধিকারিক বা পুরসভার একাধিক পুরপ্রতিনিধি দাবি করেন, অনাস্থার বিষয়ে তাঁদের কাছে কোনও তথ্য নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুরপ্রতিনিধি বলেন, ‘‘অনাস্থার বিষয়ে দলে আলোচনা হয়েছে ঠিকই। তবে তা নিয়ে পোক্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’’

    এ দিকে তৃণমূলে রবীন্দ্রনাথ অনুগামীরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিতে তোড়জোড় শুরু করেছেন। রবীন্দ্রনাথ অনুগামী বলে পরিচিত তৃণমূলের কৃষক সংগঠনের জেলা সভাপতি খোকন মিয়াঁ বলেন, "রবীন্দ্রনাথকে সরানোর বিষয়টি আমরা মেনে নেব না। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হবে। তা নিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।"
  • Link to this news (আনন্দবাজার)