• ‘স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর’ রেলকে বেসরকারিকরণ করা যাবে না, প্রাক্তন কর্তার মন্তব্যে অস্বস্তিতে কেন্দ্র
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দিলে বড়োসড়ো আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে রেলকে। আদতে এটি একটি ‘স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর’। ফলে এর সঙ্গে অন্য পরিকাঠামোগত কাজকর্ম গুলিয়ে ফেললে মুশকিল। কোনওমতেই রেলের বেসরকারিকরণ করা যাবে না। এমনকি, এই ধরনের কোনও পরিকল্পনা হলে তা আটকাতে হবে। প্রাক্তন রেলবোর্ড কর্তার এহেন কড়া মন্তব্যে রীতিমতো অস্বস্তিতে কেন্দ্রের মোদি সরকার। এমনকি নড়েচড়ে বসেছে রেলমন্ত্রকও। প্রাক্তন রেল কর্তার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সরকারিভাবে কোনও জবাব দেওয়া না হলেও মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, রেলের বেসরকারিকরণের কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। সংসদেও বিভিন্ন সময়ে এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্বয়ং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বেসরকারিকরণ নয়। রেলের বাণিজ্যিকীকরণের লক্ষ্যে কাজ করছে কেন্দ্র।

    যে প্রাক্তন রেল বোর্ড কর্তার উল্লিখিত মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে নয়াদিল্লির রেলভবনে, তাঁর নাম মহম্মদ জামশেদ। দীর্ঘদিন রেল বোর্ড সদস্যের (ট্র্যাফিক) দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। কাজ করেছেন উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের জেনারেল ম্যানেজার হিসেবেও। ট্রেনের পেপারলেস মোবাইলভিত্তিক টিকিট ব্যবস্থার প্রণয়ন প্রধানত এই প্রাক্তন রেলবোর্ড কর্তারই মস্তিষ্কপ্রসূত। এত গুরুত্বপূর্ণ একজন অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিকের মন্তব্যকে তাই কোনওমতেই হালকাভাবে নিতে পারছে না রেলমন্ত্রক।

    দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে মহম্মদ জামশেদ বলেছেন, বেসরকারিকরণ এবং বেসরকারি সংস্থাকে শামিল করানো দু’টি সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়। স্টেশনের পরিকাঠামোগত মানোন্নয়ন, ট্রেন কোচের রক্ষণাবেক্ষণ বা বিভিন্ন যাত্রী পরিষেবার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বেসরকারি সংস্থাকে শামিল করানো হয়। কিন্তু পুরো রেলই যদি বেসরকারি হাতে চলে যায়, তাহলে বিপদ। রেলের বেসরকারিকরণও কাম্য নয়। 

    তিনি বলেন, আগে রেলের জন্য বাজেটে বছরে ২০ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হত। এখন তা আড়াই লক্ষ কোটি টাকার কাছাকাছি। ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে রেলের মূলধনী খরচের পরিমাণ ছিল প্রায় তিন লক্ষ কোটি টাকা। বিগত ১০ বছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১৭ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। এর অর্থ—রেল সেক্টরে বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পণ্য পরিবহণও বেড়েছে। কিন্তু বেসরকারিকরণ হলে পুরোটাই মুখ থুবড়ে পড়বে। প্রসঙ্গত, অতীতে ‘বেসরকারি’ ট্রেন চালানোর মতো পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল রেল।
  • Link to this news (বর্তমান)