গোপাল সূত্রধর, বালুরঘাট: বাংলাদেশে অস্থিরতার জেরে এক বছরে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে হিলি দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। আগের তুলনায় ব্যবসা অর্ধেকেরও কম। সে কারণে ছ’মাস পরেও হিলি এক্সপোর্টার্স অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (হেক্কা) পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে অনীহা। জেলার বহু ব্যবসায়ী এই সংগঠনের মাধ্যমে দেশের বাইরে, মূলত বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করেন। এর কমিটি গঠন হলেও সভাপতি, সম্পাদক, কোষাধ্যক্ষ সহ বাকি পদে কাউকে বসানো হয়নি।
শুধু তাই নয়, শাসক ও বিরোধী দলের নেতাদেরও আগ্রহ কমেছে বলে দাবি করছেন একাংশ ব্যবসায়ী। সরাসরি এই অ্যাসোসিয়েশনের বিষয়ে মাথা গলানোর সুযোগ না থাকলেও একসময় কমিটি গঠনের জন্য সাংসদ থেকে শুরু করে জেলা সভাপতি, তাবড় নেতাদের বিশেষ তত্পরতা দেখা যেত। এখন ব্যবসায়ী মহলেও পদাধিকারি বেছে নেওয়ায় আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। লোকসানের পাল্লা ভারী হওয়ায় অনেকে তো আবার ব্যবসা ছেড়েও দিয়েছেন। বর্তমানে শুধুমাত্র চাল রপ্তানি হচ্ছে এই বন্দর দিয়ে। অন্যদিকে, আমদানি হচ্ছে বেশকিছু কোম্পানির প্যাকেটজাত খাবার।
এপ্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য রাজেশ আগরওয়ালের মন্তব্য, আমাদের কমিটি রয়েছে। তবে, পদাধিকারী এখনও ঠিক হয়নি। আলোচনার মাধ্যমে সব ঠিক হবে। আগের তুলনায় ব্যবসা অনেক কমেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে দিনে প্রায় ১৫০ গাড়ি পারাপার হলেও এখন নেমে এসেছে ৪০-৫০টিতে। বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভালো থাকার সময় সবসময় ব্যস্ত থাকত হিলির এই স্থলবন্দর। তাই হেক্কার কমিটি গঠন নিয়েও বকলমে রাজনৈতিক নেতাদের বাড়তি উদ্যম দেখা যেত।
বিরোধীরাও দূর থেকে ঘুঁটি সাজাতেন। তবে, শাসকদলের মতো সরাসরি তাঁদের বেশি নাক গলানোর সুযোগ থাকত না। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপির সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেন, আগে ব্যবসা ছিল, তাই তৃণমূলের নেতাদের দেখা যেত। এখন মন্দা বলে কাউকেই দেখা যায় না।
আসলে, শাসকদলের নেতারা কোনওদিন চাননি এখানকার ব্যবসায় উন্নতি হোক। তাঁরা নিজেদের উন্নতির কথা ভাবতেন। আমরা চাই পুরনো রমরমা অবস্থা ফিরুক। ব্যবসা ভালো হলে জেলারও উন্নতি হবে।
পাল্টা বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি সুভাষ চাকী। তাঁর কথায়, কমিটি গঠন সংগঠনের নিজস্ব ব্যাপার। তাদের বিষয়ে কেউই হস্তক্ষেপ করেন না। তবে, হিলির ব্যবসার ক্ষতির জন্য দায়ী বর্তমান সাংসদ এবং কেন্দ্র। তারা আজ পর্যন্ত কোনও বিষয়েই এগিয়ে আসেনি। কেন্দ্রের মন্ত্রী হয়েও সাংসদ হিলির ব্যবসার জন্য কিছু করেননি।
বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, হিলিতে আন্তর্জাতিক স্থলবন্দর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্র অনুমোদনও দিয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার সাহায্য করছে না। নিজস্ব চিত্র