বাংলার বাড়ি প্রকল্পে চাঁচল ও কলিগ্রামে টাকা না দেওয়ায় নাম বাদ! বিক্ষোভ বিডিও অফিসে
বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, চাঁচল: কারও বাড়ি পলিথিন দিয়ে ঘেরা, আবার অনেকের মাটির বাড়ির টালির ছাউনি নড়বড়ে। রাজ্য সরকারের বাংলার বাড়ি প্রকল্পের সুবিধা পাবেন বলে দিন গুনছিলেন ওই দরিদ্র পরিবারের উপভোক্তারা। চূড়ান্ত তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে মালদহের চাঁচল ১ ব্লকের চাঁচল ও কলিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক উপভোক্তা।
প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার বিডিও অফিসে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন প্রায় ৩০ জন উপভোক্তা। বাংলার বাড়ি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে এদিন সকাল এগারোটা থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা বিক্ষোভ দেখান।
প্রশাসন সূত্রে খবর, চলতি বছরের ডিসেম্বরে রাজ্যের ১৬ লক্ষ পরিবারকে বাংলার বাড়ি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য সরকার। ওই প্রকল্পের পিডব্লুএল তালিকায় চাঁচল ১ ব্লক এলাকার প্রায় ১৩ হাজার উপভোক্তার নাম ছিল। তার মধ্যে প্রায় পাঁচশো জনেরও বেশি মানুষের নাম ছাঁটাই করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ, সেই ছাঁটাইয়ের তালিকায় এমন বহু পরিবার রয়েছে, যারা কাঁচা বাড়ি ও দিনমজুরি করে সংসার চালায়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দুর্গাপুজোর সময় ব্লক অফিস থেকে সরকারি কর্মীরা বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করতে গিয়েছিলেন। তাঁরা টাকা দাবি করেছিলেন সেই সময়। বলা হয়, টাকা দিলেই নাকি চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠবে। একই অভিযোগ তৃণমূল পরিচালিত চাঁচল ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি জাকির হোসেনের। তিনি বলেন,একই বাড়িতে একাধিকবার সমীক্ষা করা হচ্ছে। টাকার বিনিময়ে প্রকৃত প্রাপকদের নাম ছাঁটাই করে অযোগ্যদের নাম ঢোকানো হয়েছে। যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা প্রকৃত প্রাপক বলেই মনে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিডিওর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
বিক্ষোভকারী চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষপাড়ার গৃহবধূ কবিতা দাস আক্ষেপ করে বলেন, ভেবেছিলাম এবার পাকাবাড়িতে থাকতে পারব। কিন্তু নাম বাদ দেওয়ায় বঞ্চিত হতে হল। ব্লক থেকে বাড়িতে সমীক্ষা করতে এসেছিল। তারা টাকা দাবি করলেও দিতে পারিনি। তাই হয়তো নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
একই অভিযোগ তুলেছেন ওই এলাকার বিক্ষোভকারী কৃষ্ণ দাস। তাঁর দাবি, পিডব্লুএল তালিকায় নাম ছিল। চূড়ান্ত তালিকা হওয়ার আগে সমীক্ষা করতে আসেন ব্লকের কর্মীরা। তাঁরা টাকা দাবি করলেও দিইনি বলে বঞ্চিত হলাম।
এদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্লক অফিসে অবস্থান বিক্ষোভ ছিলেন কলিগ্রামের বাসিন্দা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত মোক্তার আলি। তাঁর কথায়, ছেলেমেয়েকে নিয়ে কাঁচাবাড়িতে থাকি। বর্ষার সময় চাল থেকে জল পড়ে। শারীরিক অসুস্থতার জেরে কোথাও দৌড়ঝাঁপ করতে পারছি না, তাই ব্লকের সদর দরজায় বিক্ষোভে বসেছি। অভিযোগ প্রসঙ্গে চাঁচল মহকুমা শাসক ঋত্বিক হাজরা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিডিওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ। -নিজস্ব চিত্র