• এবারের মতো শেষ রাসমেলা, অপেক্ষা আরও এক বছরের, ১৫ দিনে ১৫০ কোটির ব্যবসা, খুশি ব্যবসায়ীরা
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
  • সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, কোচবিহার: রাসমেলার জন্য আবার এক বছরের অপেক্ষা। কোচবিহারের প্রাণের ঠাকুর মদনমোহনের রাসযাত্রাকে কেন্দ্র করে ২১৩তম রাসমেলা বৃহস্পতিবার শেষ হল। গত ১৫ দিন ধরে কোচবিহার তথা উত্তর-পূর্ব ভারত ছিল মদনমোহন মন্দির, রাসচক্র ও  রাসমেলামুখী। লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমে এবারের রাসমেলা ছিল প্রথম থেকে মুখরিত। হাজার হাজার দোকানে ব্যাপক কেনাকাটা, ক্রেতা বিক্রেতার হাঁক-ডাকে সরগরম ছিল এ’কদিন। কোচবিহার রাসমেলা থেকে কোনও ব্যবসায়ী খালি হাতে ফেরেন না বলে প্রচলিত ধারণা রয়েছে। রাসমেলা উপলক্ষ্যে শহরজুড়ে যে সমস্ত যানবাহন চলেছে তার চালক-মালিকরাও ভালো উপার্জন করেছেন। পুরসভার প্রাথমিক অনুমান, এবারের রাসমেলাকে কেন্দ্র করে সামগ্রিকভাবে প্রায় দেড়শো কোটির ব্যবসা হয়েছে। যা আশানুরূপ বলেই মনে করা হচ্ছে। 

    কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, এবারের ১৫ দিনের রাসমেলায় আনুমানিক ১৫০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে। ব্যবসা, যানবাহন, স্ট্যান্ড সমস্ত কিছুকে ধরেই এটা হয়েছে। 

    কোচবিহারের মহারাজাদের হাত ধরেই মদনমোহন মন্দিরে রাস উৎসবের সূচনা হয়েছিল। রাসযাত্রা উপলক্ষ্যে মদনমোহন ভক্তদের দর্শন দিতে ১৫ দিন মন্দিরের বারান্দায় অধিষ্ঠান করেন। পুণ্যার্থীরা কাছ থেকে মদনমোহনের দর্শন পান। ঐতিহ্যবাহী এই রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে যে রাসমেলা হয়, তা উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে সব থেকে বড় মেলা। কোচবিহার পুরসভা পরিচালিত এই মেলায় সাংস্কৃতিক মঞ্চ এবারও কয়েকশো শিল্পীর সমাগমে প্রথম থেকেই জমজমাট ছিল। বিকেল থেকে রাত যত গড়িয়েছে ততই রাসমেলা মানুষের ভিড়ে জমজমাট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাসমেলায় মানুষকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। 

    এই বিপুল পরিমাণ লোকসমাগমকে সুষ্ঠুভাবে সামাল দিতে প্রথম থেকে মোতায়েন ছিল এক হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মী। আটটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে সর্বক্ষণ রাসমেলার উপর নজরদারি চালানো হয়েছে। জায়গায় জায়গায় ছিল সিসি ক্যামেরা। সেগুলির ফুটেজের উপর সবসময় সর্তক দৃষ্টি রেখেছে পুলিশ। শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার উপরেও বেশকিছু নিয়ন্ত্রণ আনা হয়েছিল। যাতে শহরের যান চলাচল ও রাসমেলার মধ্যে কোনওরকম সমস্যা সৃষ্টি না হয়। গত ১৫ দিন ধরে রাসমেলা নির্বিঘ্নেই কেটেছে। ছোটখাট দোকান থেকে শুরু করে বড় দোকানদার সকলেই কম বেশি বিক্রি করেছেন। 

    এবার শুরু এক বছরের জন্য অপেক্ষা। দিন কয়েকের মধ্যেই রাসমেলা ময়দান আবার আগের জায়গায় ফিরে আসবে। শীত পেরিয়ে বর্ষায় সবুজ হয়ে উঠবে গোটা মাঠ। তারপর আগামী বছর আবারও রাসমেলা বসবে এই মাঠেই। তাই রাসমেলার শেষ দিনে মন ভালো নেই কোচবিহারের। •  নিজস্ব চিত্র। 
  • Link to this news (বর্তমান)