• বালি দুর্নীতিতে এবার ইডির হানা পূর্ব বর্ধমানে, চাঞ্চল্য
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, গলসি: এবার পূর্ব বর্ধমানের বালি মাফিয়াদের বুকে কম্পন ধরাল ইডি। বৃহস্পতিবার গোহগ্রামের গোবডাল এলাকায় যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। তাঁরা ওই গ্রামে দামোদর নদের পাশে থাকা  বালির স্টক পরিদর্শন করেন। সেখানে কতটা বালি মজুত রয়েছে, তা খতিয়ে দেখেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় দু’টি জায়গায় বালি মজুত করা রয়েছে। বাঁকুড়ার ঘাট থেকে বালি তুলে এক ব্যবসায়ী সেখানে কয়েকমাস আগে তা মজুত করেন। নিয়ম না মেনেই ওই জমির উপর বালি মজুত করা হয়। পরে জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর মজুত থাকা বালি নিলাম করে দেয়। তারপাশেই আরও এক জায়গায় বিপুল পরিমাণ বালি মজুত রয়েছে। ইডি আধিকারিকরা দু’টি জায়গায় মজুত থাকা বালি পরিদর্শন করেন।

    তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়গ্রামের অবৈধ বালির চালান নিয়ে কয়েক মাস ধরে তদন্ত শুরু হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা গলসিতে এসেছিলেন। ঝাড়গ্রামে যে সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে, তারা বাঁকুড়ার ঘাট থেকে বালি তুলে নদের এপারে গলসির গোবডাল এলাকায় মজুত করে। অবৈধভাবে মজুত করার জন্য জেলা প্রশাসন আগেই ওই বালি বাজেয়াপ্ত করে রেখেছে। প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানেও দু’বছর আগে ভুয়ো চালান তৈরি করে রমরমিয়ে বালির কারবার চলে। পুলিশ তদন্তে নেমে গলসির একটি চক্রের হদিশ পায়। তাদের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বেশকিছু তথ্যও আধিকারিকরা জোগাড় করেছিলেন। কিন্তু মাঝপথেই তদন্ত থমকে যায়। চক্রের মাস্টারমাইন্ডরা অধরা থেকে যায়। ইডি সক্রিয় হওয়ায় অনেকেই আশার আলো দেখছেন। 

    জেলার অনেকেই চাইছেন, অবৈধ বালি কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। তারা শুধু নদের ক্ষতি করেনি, সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। ইডি আপাতত ঝাড়গ্রামের কেলেঙ্কারি নিয়ে তদন্ত করছে। তবে, বালির অবৈধ কারবারের অন্যান্য দিকগুলিও তারা খতিয়ে দেখছে। ঝাড়গ্রামের বালি কারবারিদের জেরা করে তারা পূর্ব বর্ধমানের অনেকের নাম জানতে পেরেছে।

    জেলার বেশ কয়েকজন রাঘব বোয়ালকে স্ক্যানারে নিতে পারে। এক আধিকারিক বলেন, গোহগ্রামের গোবডাল এলাকায় পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফে কাউকে বালির ঘাট করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। নদের ওপারে থাকা বাঁকুড়ার ঘাটগুলি থেকে এপারে বালি এনে বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হচ্ছে। চাষের জমি ছাড়াও রাস্তার দু’পাশে বালি মজুত করা রয়েছে। 

    এদিন ইডির আধিকারিকরা সেসব কিছু দেখে গিয়েছেন। ফের তাঁরা জেলায় আসতে পারেন। সেই ইঙ্গিতও দিয়ে গিয়েছেন। সেই বার্তা পাওয়ার পর বালি মাফিয়াদের রাতের ঘুম চলে গিয়েছে।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)