রামপুরহাটে জাতীয় সড়কে উচ্চতা বেশি হাম্পের, দুর্ঘটনায় মৃত গৃহবধূ
বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: কীটনাশক খেয়ে মেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। তড়িঘড়ি অসুস্থ মেয়েকে বাইকের পিছনে চাপিয়ে হাসপাতালে ছুটেছিলেন মা। কিন্তু রাস্তায় ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। রামপুরহাটে জাতীয় সড়কে এই দুর্ঘটনার বলি হন মা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম কামরুন্নেশা বিবি (৩৭)। বাড়ি নলহাটি থানার ডিহা গ্রামে। বুধবার রাতে পারিবারিক কারণে কামরুন্নেশার মেয়ে কীটনাশক খায়। পড়শি একজনের বাইকের পিছনে মেয়েকে চাপিয়ে রানিগঞ্জ-মোড়গ্রাম ১৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে কামরুন্নেশা বিবি রামপুরহাট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রাত ১১টা নাগাদ রামপুরহাটের কাবিলপুর মোড়ের কাছে হাম্প পেরনোর সময় তিনি বাইকের পিছন থেকে আচমকাই নীচে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পান। পরে স্থানীয়রা অচৈতন্য অবস্থায় ওই বধূ ও তাঁর মেয়েকে নিয়ে রামপুরহাট মেডিকেলে ভর্তি করান। বৃহস্পতিবার ভোররাতে সেখানেই কামরুন্নেশার মৃত্যু হয়। এদিকে, মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছে মেয়ে। পরিবারের সদস্যরা জানান, অনেকটা উঁচু করে দেওয়া হয়েছে হাম্পগুলি। গতিতে বাইক চালিয়ে এসে হাম্প লক্ষ্য করতে না পারায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অনেকেই বলছেন, দুর্ঘটনা রোধে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জাতীয় সড়কের একাধিক জায়গায় হাম্প দেওয়া হয়েছে। কোনও জাতীয় সড়কে হাম্প নেই। ফলে দীর্ঘ রাস্তা নাগাড়ে গতিতে এসে হঠাৎ করে উঁচু হাম্পে বাইক, বাস ও অন্য যানবাহন গতি কমাতে গিয়ে বিপদে পড়ছে। ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা। গাড়ি চালকদের বড় অংশের অভিযোগ, হাইওয়ের উপর নির্দিষ্ট গতিবেগে গাড়ি চালানো হয়। কারণ, অন্যান্য রাস্তার মতো হাইওয়েতে কোনও হাম্প থাকে না। তাছাড়া হাম্প তৈরি হলেও নিয়ম মেনে তাতে রং করা নেই। ফলে দূর থেকে বোঝা যায় না সড়কের কোন অংশে হাম্প রয়েছে ও তার উচ্চতাই বা কত? ফলে ঘটে যায় বিপত্তি।
রামপুরহাট মহকুমার জাতীয় সড়কের দেখভালের দায়িত্বে থাকা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, ওই এলাকাগুলিতে দুর্ঘটনা ঘটছিল। তাই পুলিশের কথা মতো হাম্প দেওয়া হয়েছে। তবে তা অবৈজ্ঞানিকভাবে হয়েছে। অনেকটা উঁচু। বৈজ্ঞানিকভাবে হাম্প বসালে সেটা আট মিটার জুড়ে হবে। লাইট ও রং দিয়ে মার্কিং করা থাকবে। সেই হাম্প নির্মাণে অনেক খরচা। আমরা ডিপিআর করে পাঠিয়েছি। অনুমোদন হলে বৈজ্ঞানিকভাবে হাম্প হবে হাইওয়েতে।
এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, এই হাম্পের ফলে সুবিধা হয়েছে। যানবাহনের গতি কমায় দুর্ঘটনা অনেকটা কমে এসেছে।