• সামশেরগঞ্জে সিন্ডিকেট নিয়ে দুই গোষ্ঠীর লড়াই, ছাইপুকুরে গুলিবিদ্ধ ১, গ্রেফতার ৩
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: সামশেরগঞ্জে এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাইপুকুরের সিন্ডিকেট নিয়ে বুধবার রাতে দুই গোষ্ঠীর গন্ডগোলে গুলি চলে বলে অভিযোগ। গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হয়েছে। অপর একজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। স্থানীয় লোকজন দুই জখমকে উদ্ধার করে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিকে সেখান থেকে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিকেলে রেফার করা হয়। উভয় পক্ষই সামশেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে তিন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। যদিও মূল অভিযুক্ত পলাতক। তার সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।

    সামশেরগঞ্জ থানার এক অফিসার জানান, নিজেদের মধ্যে গন্ডগোলে দু’জন জখম হয়েছে। গুলি চলেছে বলে এখনও কোনও প্রমাণ মেলেনি। তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সামশেরগঞ্জের মালঞ্চায় ফরাক্কা এনটিপিসি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছাই নিয়ে সিন্ডিকেট রাজ চালাচ্ছিল আব্দুস সালাম। সম্প্রতি সিন্ডিকেটের সদস্যরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে যায়। বিগত চার বছর ধরে ১৫ হাজার টাকা বেতনে সালামের বডিগার্ড হিসেবে নিযুক্ত ছিল রবিউল ইসলাম। কাজের সুবিধার্থে রবিউলকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে সেকেন্ড হ্যান্ড একটি বাইকও কিনে দেয় সালাম। রবিউলের ঘনিষ্ঠ এক সদস্য অন্য সিন্ডিকেটে চলে যায়। ফলে রবিউলকে তার সিন্ডিকেট থেকে বাদ দিয়ে দেয় সালাম। ওইদিন বিকেলে তাকে ডেকে বাইকের জন্য ৭০হাজার টাকা ফেরত দিতে বলে সালাম। বেতনের টাকা সে পুরোপুরি পায়নি, তাই বাইকের টাকা শোধ হয়ে গিয়েছে বলে জানায় রবিউল। তাতেই খেপে যায় সালাম। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ির পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল রবিউল। এমন সময় তিনটি বাইকে কয়েকজন দুষ্কৃতী আসে। তাদের কাছে অস্ত্রশস্ত্র ছিল। রবিউলকে ধাক্কা দিয়ে তারা মাটিতে ফেলে দেয়। রবিউল মাটিতে পড়ে গেলে পরপর তিন রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। একটি গুলি গিয়ে রবিউলের ডান হাতে লাগে। ওই সময় ট্রাক্টর নিয়ে ফিরছিলেন শিস মহম্মদ। ঘটনাটি দেখে ফেলায় দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে। এরপর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে পালিয়ে যায়। মেডিকেল কলেজের বেডে শুয়ে রবিউল বলেন, আব্দুস সালামের সঙ্গে আমি বহুদিন ছিলাম। হঠাৎ আমাকে কাজ থেকে বাদ দিয়ে দেয়। তারপর বাইকের ৭০হাজার টাকা পাব বলে দাবি করে। সে আমাকে পুরো বেতন দিত না। সেই হিসেবে বাইকের টাকা আগেই শোধ হয়ে গিয়েছে। ভাবতেই পারিনি ও এসে গুলি করবে। অভিযুক্তের বাবা কেতাবুল শেখ বলেন, যখন ঘটনাটি ঘটে তখন ছেলে ঘরেই ছিল। পরে খবর পেয়ে আমরা দেখতে গিয়েছিলাম। তাই এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। 

     গুলিবিদ্ধের বাড়ির সামনে উদ্বিগ্ন পরিবার। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)