• পাঁচ বছরে চার লক্ষ ভুয়ো রেশনকার্ড বাতিল জেলায়
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: রাজ্যে এসআইআর আবহে বৃহস্পতিবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গত পাঁচ বছরে প্রায় চার লক্ষ ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করল জেলা প্রশাসন। ফলে জেলায় ভুয়ো রেশন কার্ডের সংখ্যা বর্তমানে তলানিতে নেমে এসেছে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, বহু মানুষের মৃত্যু হলেও রেশন কার্ডের তালিকায় নাম থেকে গিয়েছিল। ২০২১ সাল থেকে রেশন কার্ডে নাম বাতিলের কর্মসূচি শুরু হয়। এখনও সামান্য কিছু ভুয়ো রেশন কার্ড রয়েছে ঠিকই, তবে সেগুলিকেও চিহ্নিত করে বাতিলের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে খাদ্য দফতর। চলতি বছরের মধ্যে একশো শতাংশ ভুয়ো কার্ড বাতিল করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। 

    জেলার খাদ্য দফতরের আধিকারিক অরবিন্দ সরকার বলেন, রেশন কার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া বছরভর চলছে। প্রচুর সংখ্যক রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নিদের্শ অনুসারে একজন মানুষও যাতে রেশন পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। 

    প্রসঙ্গত, ভুয়ো রেশন কার্ডের রমরমা রাজ্যে বাম আমল থেকেই শুরু হয়। সেই সময় প্রত্যন্ত এলাকায় ভুয়ো রেশন কার্ড ব্যবহার করেই বহু মানুষ রেশন পেতেন। একসময় ভুয়ো কার্ডের সংখ্যা বাড়ার ফলে রেশনে ঘাটতি দেখা যেত। এর ফলে স্বচ্ছ রেশন কার্ড থাকা সত্ত্বেও অনেকেই পরিষেবা পেতেন না। রেশনের অপচয় হওয়ায় রাজ্যের কোটি কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হত। এরপর ২০১১ সালে ঘটল পালাবদল। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, রেশন সামগ্রী বিভিন্ন প্রান্তে পাচার হত। অন্যান্য জেলার মত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাতেও ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতোই শুরু হয় স্কুটিনি। খাদ্যদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রায় ৪৮ লক্ষ মানুষ রেশন পরিষেবা পেয়ে থাকেন। তবে পাঁচ বছর ধরে নতুন রেশন কার্ড তৈরির পাশাপাশি বাতিল করার প্রক্রিয়াও চলছে। জানা গিয়েছে, ২০২১ সালে ৭২ হাজার রেশন কার্ড, ২০২২ সালে ৩ লক্ষ ৪০ হাজার রেশন কার্ড, ২০২৩ সালে ১০ হাজার কার্ড, ২০২৪ সালে ৬ হাজার কার্ড ও চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ৫০০টি রেশন কার্ড বাতিল হয়েছে। 

    প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, রেশন কার্ড ও আঁধার কার্ড লিঙ্ক করার জন্য প্রশাসনের তরফে ক্যাম্প হয়েছে। রেশন ব্যবস্থায় দালাল চক্র প্রায় উঠেই গিয়েছে। অনেকেই ভুয়ো রেশন কার্ড বানিয়ে খাদ্য সামগ্রী নিত। কিন্তু বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা আসার পর দুর্নীতি বন্ধ হয়েছে।  কার্ডগুলি বাতিলের পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। অনেকক্ষেত্রেই মারা যাওয়ার পরও কার্ড বাতিলের জন্য আবেদন করা হয়নি। সেই কার্ডগুলি আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করার সময় সেগুলি বাতিল হয়।  আবার অনেকে রাতারাতি নিজের ঠিকানা বদল করেছেন। সেইসময় আগের ও পরের ঠিকানায় দু›টি কার্ড ছিল। সেইগুলিকেও বাতিল করা হয়েছে। এখনও কার্ড বাতিলের কাজ চলছে।  

     প্রতীকী ছবি
  • Link to this news (বর্তমান)