৫০ বিঘা জমিতে সাজছে তপসিয়ার কবরখানা, বাগান ঘুরে দেখার সুযোগ, প্রায় ৫ হাজার লরি মাটি ফেলে চলছে সংস্কার
বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শহরের বুকে ‘সাজানো-গোছানো’ কবরস্থান। সুদৃশ্য আলো, পার্ক, ল্যান্ডস্কেপ তার সঙ্গে কবরখানা দেখার সুযোগ। যেভাবে পার্ক স্ট্রিটের শতাব্দী প্রাচীন খ্রিস্টান কবরস্থান ঘুরে দেখার সুযোগ রয়েছে, তেমনভাবেই এবার তপসিয়া গোবরা হিন্দু কবরস্থানের ভিতরেও ঘোরা যাবে। বিশ্রাম করা যাবে। সেভাবেই সেজে উঠবে। একটি বেসরকারি সংস্থা হিন্দু কবরস্থান সংস্কারের কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই সেখানে ফেলা হয়েছে পাঁচ হাজার লরি মাটি।
তপসিয়ায় বহু বছর ধরেই চালু রয়েছে কলকাতা পুরসভার নিয়ন্ত্রণাধীন হিন্দু কবরস্থান। সেই সঙ্গে রয়েছে পুরসভার পিস ওয়ার্ল্ড। সেখানে ২০টি মৃতদেহ রাখার সুযোগ আছে। প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে থাকা এই হিন্দু কবরস্থানের অধিকাংশ এলাকা প্রায় জঙ্গলে ঢাকা ছিল। গোটা এলাকা ব্যবহার করার সুযোগ ছিল না। ফলে সব জায়গায় কবর দেওয়া যেত না। পুরসভার এক কর্তা বলেন, এখানে মূলত ১২ বছর পর্যন্ত বাচ্চাদের কবর দেওয়া হয়। কিন্তু এত বড় জমি অধিকাংশ অব্যবহৃত হয়ে পড়েছিল। তাই এলাকার সৌন্দর্যায়ন এবং সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়। জঙ্গল পরিষ্কার করে নতুন করে মাটি ফেলে তৈরি করা হচ্ছে কবরখানা। পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছে, জায়গাটি নতুন করে সাজিয়ে তোলা হবে। তৈরি করা হচ্ছে দু’টি জলাশয়। বসবে সুদৃশ্য পথবাতি। হবে ওয়াক ওয়ে। বসার জন্য বেঞ্চ থাকবে। ডেপুটি মেয়র এবং কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, ‘এখানে ঘুরে দেখার সুযোগ থাকবে। ল্যান্ডস্কেপ তৈরি হবে। গোটা এলাকার সৌর্ন্দযায়ন হচ্ছে।’
কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটি ফেলতে গিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। যে সংস্থাকে নতুন মাটি ফেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তারা ধাপা থেকে জঞ্জাল ভর্তি মাটি ফেলে কবরখানার জমি তৈরি করেছিল। বিষয়টি জানতে পেরে হস্তক্ষেপ করে পুর কর্তৃপক্ষ। তারপর মাটি আবার তোলানো হয়। পরে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টে জমা হওয়া ‘স্লাজ’ বা পলিমাটি ফেলে নতুন করে জমি তৈরি করা হয়। প্রায় পাঁচ হাজার লরি মাটি ফেলা হয়েছে। পুরসভার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, বাচ্চাদের কবরস্থান হলেও এখানে এতদিন জমির অভাব ছিল। এত বড় জায়গা থাকলেও সর্বত্র কবর দেওয়ার সুযোগ ছিল না। রোজ গড়ে দুই থেকে তিনটি বাচ্চার মরদেহ কবর দেওয়ার জন্য আসে। ফলে জমির আয়তন বাড়ানোর প্রয়োজন। তাই জায়গাটিকে সংস্কার করা হচ্ছে।