এই সময়: আসন সংখ্যার নিরিখে উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু দলের অন্দরের সাংগঠনিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই ঘাঁটিতে তৃণমূল কংগ্রেস ধীরে ধীরে আধিপত্য কায়েম করছে। সেখানকার গড় অটুট রাখতে বিজেপির সিদ্ধান্ত, উত্তরবঙ্গকে রাজ্য সরকার কী ভাবে বঞ্চনা করে চলেছে তা নতুন ভাবে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে সাধারণ মানুষকে। বৃহস্পতিবার সল্টলেকে বিজেপির রাজ্য দপ্তরে তারই সলতে পাকালেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
তৃণমূল অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের দিকে পাল্টা তির ছুঁড়ে প্রশ্ন তুলেছে, সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের এত বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেও কেন সেটাকে জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করল না নরেন্দ্র মোদী সরকার? সুকান্তর দাবি, '২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ১৯ শতাংশ মানুষ উত্তরবঙ্গে থাকেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের ২০২৪-২৫ আর্থিক বর্ষের বাজেটে সেখানকার জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোট বাজেটের ০.২৩ শতাংশেরও কম। অর্থাৎ, গোটা রাজ্যের বাজেট একশো টাকা হলে উত্তরবঙ্গের জন্য বরাদ্দ ২৩ পয়সারও কম!'
তিনি বলেন, 'এই পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, উত্তরবঙ্গের মানুষকে কী চোখে দেখে কোচবিহারের প্রাক্তন বিজেপি তৃণমূল সরকার।' তাঁর অভিযোগ, 'বাগডোগরা বিমানবন্দরের উন্নয়নের জন্য মোদী সরকার ১৫৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সেটা আটকাতেও এতদিন মরিয়া চেষ্টা চালানো হয়েছে রাজ্যে তরফে।'
সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে পাশে বসিয়ে সুকান্ত বেঁধেন রাজ্যকে। বলেন, 'দেশের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী থাকার সময়ে নিশীথ প্রামাণিক উত্তরবঙ্গে একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ৭০০ কোটি টাকা নিয়ে এসেছিলেন। রাজ্য জায়গা দেয়নি। নিশীথ তখন রেল মন্ত্রককে অনুরোধ করেন জায়গা দেওয়ার জন্য। রেল জমিও দেয়। কিন্তু তারপরেও কমপ্লেক্স তৈরি হয়নি। কারণ, রেলের দেওয়া জমির মাঝখানে কিছু বিদ্যুতের পোস্ট আছে। বহুবার চিঠি দেওয়ার পরেও সেই পোস্টগুলি সরায়নি রাজ্য। ফলে ৭০০ কোটি টাকা জলে যেতে বসেছে।'
এরপরেই সুকান্ত দাবি করেন, 'গত বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের ৫৬টি আসনের সিংহভাগ বিজেপি জিতেছিল। এ বার আরও বেশি আসন উত্তরবঙ্গ থেকে বিজেপি পাবে।' বালুরঘাটের সাংসদের অভিযোগের জবাবে তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেন, 'উত্তরবঙ্গে এতবড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরেও কেন সেটা জাতীয় বিপর্যয় হিসেবে ঘোষণা করা হলো না? এর জবাব আগে দিন সুকান্ত। একশো দিনের কাজের টাকা সাড়ে তিন বছর ধরে বন্ধ। তাতে উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।'