বন্ধুর বাড়ি পড়তে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে মৃত্যু যুবকের
আনন্দবাজার | ২১ নভেম্বর ২০২৫
সর্বভারতীয় চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য রাতে বন্ধুর বাড়িতে থেকে যাবেন বলেজানিয়েছিলেন। ভোরে পরিজনেরা খবর পেলেন, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছেন ২৮ বছরের ওই যুবক। তল্লাশিতে পরে মিলল তাঁরদেহ। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বরাহনগরে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই যুবকের নাম সুমিত গুপ্ত। তিনি বরাহনগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শীতলা মাতা লেনের বাসিন্দা। পেশায় পাথরের মূর্তি শিল্পী সুজিত গুপ্তের বড় ছেলে সুমিত ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, বুধবার বিকেলে সুমিত জানিয়েছিলেন, আলমবাজারে এক বন্ধুর বাড়িতে যাচ্ছেন। সেখানে কয়েক জন বন্ধু মিলে পড়াশোনা করে রাতে ফিরবেন। কিন্তু রাত ১টা বেজে গেলেও ছেলে না ফেরায় তাঁকে ফোন করেন সুজিত। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে বলেছিল ফিরতে দেরি হবে। রাত সওয়া তিনটে নাগাদ ফের ফোন করি। তখন জানিয়েছিল রাত হয়ে গিয়েছে, তাই সকালে ফিরবে।’’
যুবকের পরিজনদের দাবি, এ দিন সকাল সওয়া ৬টা নাগাদ সুমিতের বন্ধুরাই তাঁদের ফোন করে জানান, গঙ্গায় স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়েছেন ওই যুবক। তড়িঘড়ি পরিজনেরা চলে আসেনআলমবাজার ঘাটে। খবর পেয়ে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি তথা বরাহনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ অঞ্জন পালও গঙ্গার ঘাটে পৌঁছে যান। তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী চলে আসে। নৌকা নিয়ে তল্লাশির পাশাপাশি ডুবুরিও নামানো হয়।’’ অঞ্জন জানান, আরও দুই বন্ধুর সঙ্গে গঙ্গায় নেমেছিলেন সুমিত। মিনিট দশেক পরে এক জন উঠে এলেও জলের টানে ওই যুবকএবং তাঁর আর এক বন্ধু আর উঠতে পারেননি বলেই জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, সুমিত ও তাঁর এক বন্ধুকে ভেসে যেতে দেখে গঙ্গায় স্নান করতে আসা অন্য লোকেরা উদ্ধার করতে নামেন। তাঁরা পুলিশ ও পরিজনদের জানিয়েছেন, কোনও মতে এক জনকে উদ্ধার করা গেলেও জলের তোড়ে তলিয়ে যান সুমিত।
তল্লাশি চলাকালীন গঙ্গার ঘাটেই কান্নায় ভেঙে পড়েন সুমিতের বাবা-মা। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে ঘাটের কিছুটা দূর থেকে সুমিতের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সুজিত বলেন, ‘‘ইউপিএসসি-তে সুযোগ পাওয়ার জন্য দিন-রাত এক করে প্রস্তুতি নিচ্ছিল ছেলেটা। রাতে বন্ধুরা মিলে পড়াশোনা করতে বেরিয়ে যে আর ফিরবে না, ভাবতেও পারছি না।’’