ট্রাম্পের দাবিতেই সিলমোহর? রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করছে রিলায়েন্স
প্রতিদিন | ২১ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ফের নতুন শুল্ক চাপানোর প্রচেষ্টা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর সরাসরি প্রভাব পড়ার কথা ভারতের উপর। ট্রাম্পের দাবি কার্যত মেনে নিল মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। বৃহস্পতিবার তাঁরা জানিয়েছে জামনগরের এসইজেড শোধনাগারে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি বন্ধ করা হবে। ট্রাম্প এবং মার্কিন প্রশাসন বারবার বলেছে, ভারতের উপর আমেরিকার অসন্তোষের অন্যতম কারণ রাশিয়ার তেল কেনা।
ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় ইইউ-এর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে রাশিয়ার তেলের উপর নিষেধাজ্ঞা ২১ জানুয়ারী থেকে কার্যকর হবে। এর ঠিক আগে, রিলায়েন্স বৃহস্পতিবার জানিয়েছে তারা ২০ নভেম্বর থেকে তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাক শোধনাগারে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।
রিলায়েন্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “১ ডিসেম্বর থেকে, SEZ রিফাইনারি থেকে যে পণ্য রপ্তানি হবে সেগুলি সব এমন অপরিশোধিত তেল থেকে করা হবে যা রাশিয়া থেকে আনা হয়নি। ২১ জানুয়ারী, ২০২৬ থেকে কার্যকর হতে চলা পণ্য আমদানির বিধিনিষেধের জন্যই এই কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই করা হয়েছে।” রিলায়েন্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ১২ নভেম্বর শেষ পণ্য বোঝাই করা হয়। ২০ নভেম্বর বা তার পরে আসা পণ্য ডমেস্টিক ট্যারিফ এরিয়া রিফাইনারিতে ব্যবহার করা হবে।
গুজরাটের জামনগরে দু’টি রিফাইনারি চালায় রিলায়েন্স। ডমেস্টিক ট্যারিফ এরিয়া ইউনিট, মূলত ভারতীয় বাজারে পরিষেবা দেয়। অন্যদিকে এসইজেড ইউনিট মূলত রিলায়েন্স পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের অধীনে নির্মিত। এখান থেকে মূলত রপ্তানির কাজ হয়।
শুক্রবার, বিএসইতে প্রাথমিক লেনদেনে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১,৫৪৯.১৫ টাকা। সংস্থা জানিয়েছে, এই ঘোষণার আগে পর্যন্ত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার যে প্রতিশ্রুতি ছিল তা পূরণ করা হবে।
রাশিয়ার বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী সংস্থা রোসনেফ্ট এবং লুকঅয়েল রাশিয়া থেকে ভারতে আসা বেশিরভাগ অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করে। রোসনেফ্টের সঙ্গে প্রতিদিন ০.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেলের চুক্তি রয়েছে রিলায়েন্সের। রাশিয়ার তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট এবং লুকঅয়েলের সঙ্গে লেনদেনের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ২১ নভেম্বর শেষ হবে। এর একদিন আগেই এই বিবৃতিটি দিয়েছে রিলায়েন্স। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২২ অক্টোবর উভয় সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। মার্কিন ট্রেজারি সচিব স্কট বেসেন্ট একটি বিবৃতিতে জানান, ‘ইউক্রেনে ভয়াবহ এবং অর্থহীন এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন পুতিন। তিনি তা বন্ধ করতে আগ্রহী নন। এর শাস্তিস্বরূপ দুই বৃহত্তম রুশ তেল সংস্থা রসনেফট এবং লুকঅয়েল-এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হল। এই দুই তেল সংস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। তারা পুতিনকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে সাহায্য করছে।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টায় ফের একবার শুল্কের আশ্রয় নিচ্ছেন ট্রাম্প। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি নতুন সেনেট আইনকে সমর্থন করবেন। এই আইনের মাধ্যমে মস্কোর সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলির উপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক চাপানো ক্ষমতা পাবে ওয়াশিংটন।