জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শহরের বুকে নিরাপত্তা বাড়াতে বড়সড় পদক্ষেপ করল বিধাননগর পুলিস কমিশনারেট। তবে এবার বন্দুক বা ওয়াকিটকি নয়, তাদের হাতে উঠল এক অত্যাধুনিক, শব্দহীন বিদ্যুৎ-অস্ত্র! যার নাম ইলেকট্রিক বাইক। সাধারণ ভাবে দেখলে এগুলি স্রেফ বাইক, কিন্তু এর শব্দহীন গতি এবং স্মার্ট মুভমেন্টের কারণে নিউ টাউন এলাকায় অপরাধীদের ঘুম ভাঙাতে চলেছে এই নয়া বাহিনী।
জনসুরক্ষার এই লড়াইয়ে পুলিসের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে রিয়েল এস্টেট জায়ান্ট মার্লিন গ্রুপ (Merlin Group)। তাদের কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি (CSR) উদ্যোগের অংশ হিসেবে তারা বিধাননগর কমিশনারেটকে এক লপ্তে ১০টি অত্যাধুনিক ই-বাইক তুলে দিল।
শুক্রবার নিউ টাউনে এক জমকালো অনুষ্ঠানে এই বাইকগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা— বিধাননগর পুলিশ কমিশনার আইপিএস মুকেশ, জয়েন্ট কমিশনার (সদর দফতর) আইপিএস ড. বাদনা বরুণ চন্দ্র শেখর এবং নিউ টাউনের ডেপুটি কমিশনার অব পুলিশ আইপিএস মানব সিংলা। মার্লিন গ্রুপের তরফে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার ডিরেক্টর বিকাশ মেমানি সহ অন্যান্য পদাধিকারীরা।
"অস্ত্র" ব্যবহারের ব্লু-প্রিন্ট কী?
পুলিসের সূত্রে খবর, এই ই-বাইকগুলি মূলত নিউ টাউন এলাকার বাজার, অফিস পাড়া, জনবহুল পার্ক, মেট্রো স্টেশন এবং অন্যান্য জনসমাগমের স্থানগুলিতে টহল দেওয়ার কাজে লাগানো হবে।
এই বাইকগুলির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এর নীরবতা এবং অত্যাধিক গতি (Smart Mobility)। যেখানে ঐতিহ্যবাহী বা ভারী বাইক বা গাড়ি নিয়ে সরু গলি বা ভিড়ের মধ্যে টহল দিতে অসুবিধা হতো, এই ই-বাইকগুলি সেই সমস্যা নিমেষে দূর করবে। ভিড়ের মধ্যে শব্দ না করে পৌঁছে যাওয়া যাবে অপরাধের স্পট-এ।
কমিশনারেটের তরফে আইপিএস মুকেশ এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, "মার্লিন গ্রুপের এই সহায়তা আমাদের টহলের প্রক্রিয়াকে অনেক মসৃণ করে দেবে। এর ফলে নিউ টাউন জুড়ে আমাদের পুলিশি তৎপরতা আরও বাড়বে। ই-বাইক ব্যবহারের মাধ্যমে 'স্মার্ট পুলিশিং'-এর যে লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি, এই উদ্যোগ সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।"
অন্যদিকে, নিউ টাউনের ডেপুটি কমিশনার আইপিএস মানব সিংলা বলেন, "এই বাইকগুলো বিশেষ করে ঘিঞ্জি বা দুর্গম এলাকায় আমাদের টহলদারির সক্ষমতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেবে। স্মার্ট, সবুজ এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়াশীল পুলিশি ব্যবস্থার জন্য এই ই-বাইক আদর্শ।"
মার্লিন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাকেত মোহতা বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, উন্নত শহর তৈরি শুধু ইট-কাঠ-পাথরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, নিরাপদ ও সবুজ পরিবেশও জরুরি। বিধাননগর পুলিশের সাথে এই অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা শুধু নিরাপত্তা নয়, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চাই।"
বলাই বাহুল্য, এই ১০টি শব্দহীন বাইক নিউ টাউনে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পুলিশিংয়ের এক নতুন যুগের সূচনা করল।