সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এসআইআর আবহে অনুপ্রবেশ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তুঙ্গে চর্চা। বাংলার শাসক শিবির তৃণমূলের দাবি, অনুপ্রবেশ রুখতে ব্যর্থ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আবার গেরুয়া শিবিরের মতে, ভোটবাক্সে ফায়দা তুলতে অনুপ্রবেশে মদত দিচ্ছে রাজ্য। দড়ি টানাটানির মাঝেই এবার অনুপ্রবেশ নিয়ে বিএসএফ-কে কাঠগড়ায় তুললেন দিলীপ ঘোষ। রাজনৈতিক মহলের মতে, পদ্মশিবিরের অভ্যন্তরীণ ফাটল যে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে, প্রাক্তন রাজ্য বিজেপি সভাপতির দাবিতেই যেন স্পষ্ট হয়েছে।
দিলীপ ঘোষ শুক্রবার বলেন, “অনুপ্রবেশকারীদের দেশে ঢোকার দায় বিএসএফেরও। পুলিশ এবং বিএসএফ টাকার জন্য এসব করে।” এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আমরা যা এতদিন ধরে বলে আসছিলাম, তা বিজেপিরই একজন প্রবীণ নেতা স্বীকার করে নিলেন! এরপর কী বা বলার থাকতে পারে!”
দলের সম্পূর্ণ বিপরীতে গিয়ে দিলীপ ঘোষ কেন এমন মন্তব্য করলেন, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা। কারণ, দীর্ঘদিন ধরেই অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে সরগরম বঙ্গ রাজনীতি। বিজেপির দাবি, ভোটবাক্স ভরানোই লক্ষ্য। তাই অনুপ্রবেশ নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই রাজ্যের শাসক শিবিরের। ইচ্ছাকৃতভাবে নকল পরিচয়পত্র তৈরি করে অনুপ্রবেশকারীদের বাংলায় আশ্রয় পেতে নাকি সাহায্যই করা হচ্ছে। যদিও মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে বিএসএফ। তাই অনুপ্রবেশ হলে তা রোখার দায়িত্ব নিতে হবে বিএসএফকেই। যদিও সে বিষয়ে কান দিতে নারাজ শাহ-মোদিরা।
এই দড়ি টানাটানির মাঝে দিলীপ ঘোষের মন্তব্য যে কতটা ইঙ্গিতপূর্ণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বলে রাখা ভালো, গত লোকসভা নির্বাচনে খড়গপুরের বদলে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের টিকিট দেওয়া হয় দিলীপ ঘোষকে। নিজের এলাকায় টিকিট না পাওয়ার পর থেকেই মনোমালিন্যর সূত্রপাত। লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব যেন বাড়ে কয়েকগুণ। তারপর সময় যত বাড়তে থাকে, সেই ফাটল আরও চওড়া হয়ে ওঠে। দলে মোটের উপর ‘কোণঠাসা’ দিলীপ ঘোষ। বর্তমানে বঙ্গ পদ্মশিবিরে যেন একেবারেই ‘ব্রাত্য’ তিনি। দলে এই মুহূর্তে কোনও পদ নেই তাঁর। দলীয় কোনও কর্মসূচিতেও সেভাবে দেখা যায় না। দলের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বাড়তে থাকার জন্যই কি গেরুয়া শিবিরের ‘অনুগত সৈনিক’ দিলীপের গলায় বিপরীত সুর? স্বাভাবিকভাবেই উঠছে প্রশ্ন।