পড়ুয়া আত্মহত্যা বন্ধ করতে কড়া আইন চালুর পথে কেন্দ্র
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: যতই প্রভাবশালীই হোক না কেন, পড়ুয়া আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে কোনওমতেই রেয়াত করা হবে না। শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট স্কুলের অধ্যক্ষ কিংবা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও রুজু করা হতে পারে। দিনদুয়েক আগেই দিল্লির একটি খ্যাতনামা বেসরকারি স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া শৌর্য পাটিল মেট্রোয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরিবারের অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাগাতার মানসিক হেনস্তার চাপ সহ্য করতে না পেরেই এমন পথ বেছে নিয়েছে ওই পড়ুয়া। ওই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আর দিল্লির এহেন ঘটনার পরেই এই ব্যাপারে দেশব্যাপী আরও কড়া অবস্থান নিতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্র। কারণ এর জেরে যে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে, তা সামাল দিতে নাজেহাল দশা মোদি সরকারের।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, এই ব্যাপারে শক্ত আইন প্রণয়নের উদ্দেশে শীঘ্রই সবক’টি রাজ্যের সঙ্গে কথা বলবে শিক্ষামন্ত্রক। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হবে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। তবে শুধুমাত্রই দিল্লির ঘটনা নয়। সম্প্রতি রাজস্থানের জয়পুরেও একটি স্কুলে পড়ুয়া আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। চতুর্থ শ্রেণির এক পড়ুয়া স্কুলের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়। পরে জানা যায়, সহপাঠী এবং শিক্ষকদের কাছে লাগাতার মানসিক হেনস্তার শিকার হত সে। ঠিক যেমনটা হয়েছে দিল্লিতে। ইতিমধ্যেই জয়পুরের ঘটনায় স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জবাব চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিএসই। কারণ সিবিএসইর তদন্তে স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির স্পষ্ট প্রমাণ মিলেছে। শিক্ষামন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে।
জানা যাচ্ছে, একের পর এক এমন ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ কেন্দ্রের মোদি সরকার। এক্ষেত্রে কেন বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিই বারবার সংবাদের শিরোনামে উঠে আসছে? এই প্রশ্নের জবাব চেয়ে এবার ‘ডাবল ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলির কাছ থেকে রিপোর্ট চাইতে চলেছে মোদি সরকার। সামগ্রিক বিষয়কেই তাই অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মহল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া আত্মহত্যার হার কত? এক্ষেত্রে ‘ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো’র (এনসিআরবি) তথ্যকে হাতিয়ার করে কেন্দ্রের দাবি, দেশজুড়ে এহেন ঘটনা ক্রমশ কমছে। ২০২০ সালে ৮.২ শতাংশ, ২০২১ সালে ৮ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৭.৬ শতাংশ পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন। তবে এর পিছনে অন্যতম কারণ হিসেবে মানসিক হেনস্তা বা নির্যাতন রয়েছে বলেই মত শিক্ষামন্ত্রকের আধিকারিকদের একাংশের।