পরকীয়ার জের, ফোন করে ডেকে যুবককে খুন, গ্রেফতার বধূর শ্বশুর
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বালুরঘাট: রাতভর নিখোঁজের পর যুবকের মৃতদেহ ডোবা থেকে উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উন্মোচন হল। পরকীয়ার জেরে খুন হয়েছেন বাইশ বছরের ওই যুবক। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ফোনে যুবককে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করে ডোবায় দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়েছে পতিরাম থানার গোপালবাটি গ্রামপঞ্চায়েতের শিমুলডাঙ্গা গ্রামে।
একই গ্রামে বাড়ি মৃত যুবক শৈলেন কিস্কু এবং ওই বধূর। স্থানীয় সূত্রে খবর, গত একবছর ধরে দুজনের সম্পর্ক। গত বৃহস্পতিবার সকালে বধূর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি ডোবা থেকে শৈলেনের দেহ উদ্ধার হয়। ডোবায় জল বেশি না থাকাতে এই মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। মৃতের গলায় দাগও ছিল। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শৈলেনকে ফোন করে ডেকে নিয়ে যায় ওই বধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ডেকে পিটিয়ে মারা হয় যুবককে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে যুবকের গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। তারপর দেহ স্থানীয় একটি ডোবাতে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনায় ওই বধূ ও তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পতিরাম থানায় শুক্রবার সন্ধ্যায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে তিনজনকে আটক করেছে। মূল অভিযুক্ত ওই বধূর শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের নাম রবিন কিস্কু। পতিরাম থানার ওসি সৎকার সাংবো বলেন, পাঁচজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আপাতত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই বধূর স্বামী ভিনরাজ্যে থাকেন। গত এক বছর ধরে শৈলেনের সঙ্গে ওই বধূর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কের কথা জানতেন বধূর স্বামীও। এনিয়ে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ঝামেলাও চলছিল বধূর স্বামীর। অভিযোগ, বুধবার রাতে ওই বধূর ফোন থেকেই যুবককে ডেকে আনা হয়। এরপর বাড়িতেই তাকে পিটিয়ে মারা হয়। ওই বধূর শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। পরে ওই যুবকের দেহ প্রায় ২০০ মিটার দূরে একটি ডোবাতে ফেলে দেওয়া হয়। গলায় ফাঁস দেওয়া শাড়ি আরেকটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। দেহ উদ্ধারের পর থেকেই অভিযুক্ত পরিবারটি ঘাপটি মেরে ছিল। ওই বধূরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
এদিন সকালে বধূর শ্বশুর ও শাশুড়ি ভয়ে পুরো ঘটনাটি তাদের এক নিকট আত্মীয়কে জানায়। তিনি পুরো বিষয়টি মৃতের পরিবারকে জানিয়ে দিতেই এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়। মৃতের জেঠু রমেশ কিস্কু বলেন, ভাইপোর সঙ্গে পাশের পাড়ার এক বধূর সম্পর্ক ছিল। আমরা সবাই এনিয়ে আগে সতর্ক করেছিলাম। বুধবার রাতে ভাইপোকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই পরিবারের সবাই মিলে খুন করে। ওই বধূর শাড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে দেহ ফেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা থানায় খুনের অভিযোগ করেছি।