নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: শুক্রবার বর্ধমানে সাপ ধরা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড বেধে যায়। কয়েক দিন আগে মির্জাপুরের নতুনপল্লি এলাকায় একটি রাইসমিলে গোখরো সাপ দেখা যায়। নিমো মালপাড়ার এক সাপুড়ে গোখরোটিকে ধরে আনেন। সেই সময় বনদপ্তরের তিন কর্মী ঘটনাস্থলে ওই সাপুড়েকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সাপুড়েরা মেমারির নিমো মালপাড়া থেকে বর্ধমানে বনদপ্তরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তাঁরা আধিকারিকদের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। নির্দিষ্টভাবে তিনজন কর্মীর নামে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে আগেও বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছিল। বনদপ্তরের কর্মীদের সঙ্গে তাঁদের বচসা বেধে যায়। বেশ কিছুক্ষণ পর আধিকারিকরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেন। ডিএফও সঞ্চিতা শর্মা বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাপুড়েরা বলেন, জেলায় কোথাও সাপ দেখা দিলে বনদপ্তরের কর্মীদের দেখা যায় না। নিমো মালপাড়ার সাপুড়েরা গিয়ে সাপ ধরেন। পরে সেগুলি জঙ্গলে ছেড়ে দেয়। তারপর বিভিন্ন সময় অত্যাচার করা হয়। সাপুড়ে সঞ্জিত মাল বলেন, ওই দিন রাইসমিল কর্তৃপক্ষ বনদপ্তরেও খবর দেয়। সরকারি কর্মীরা আসেননি। পরে আমাদের এক কর্মী সেখানে গিয়ে সাপটিকে ধরে আনেন। সেই সময় বনদপ্তরের তিন কর্মী তাঁদের উপর অত্যাচার করেন। কেন তাঁরা সাপ ধরেছেন, তা জানতে চান। তা নিয়ে দু’পক্ষর মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। পরে বনদপ্তরের তিন কর্মী তাঁদের মারধর করেন।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, সব জায়গায় সাপ ধরতে যাওয়ার মতো প্রয়োজনীয় কর্মী নেই। সেক্ষেত্রে সাপুড়েদের সহযোগিতা নিতে হয়। ওই দিন তিন কর্মী নিজেদের ক্ষমতা জাহির করার জন্য তাঁদের মারধর করেছেন। যদিও অভিযোগ, বেশিরভাগ সময় পেশাদার সাপুড়েরা টাকার বিনিময়ে সাপ ধরেন। তবে তা জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া নিয়ম। কেউ সেই নিয়ম না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সাপ ধরার পর অনেক সাপুড়ে তা ছেড়ে না দিয়ে বাড়িতেই রেখে দেন। অনেক সময় সাপ বিক্রির অভিযোগও এসেছে। তবে, কাউকে মারধর করা উচিত নয়। এর আগেও বহু সাপুড়ের কাছে সাপ উদ্ধার করা হয়েছিল। সাপখেলা দেখানোও আইন বিরোধী। সেটা করা যায় না।-নিজস্ব চিত্র