যুবক খুনের অভিযোগ নিল না থানা, ঘাটালে মৃতদেহ নিয়ে পথ অবরোধ
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: পুলিশ খুনের অভিযোগ না নেওয়ায় মৃতদেহ নিয়ে পথ অবরোধ করলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার ঘাটাল থানার নোনাসরেন-রাধানগর রাস্তার উপর নোনাসরেন বাজারে দীর্ঘক্ষণ এই অবরোধ চলে। ঘাটাল থানার ওসি শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে গিয়েও প্রথমের দিকে অবরোধ তুলতে পারেননি। কয়েক দিন আগে কেশপুর থানা এলাকায় ঘাটাল থানার ভাগীরথপুরের বাসিন্দা শেখ মামদুল আলির (৩৪) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই এদিনের বিক্ষোভ অবরোধ বলে জানা গিয়েছে। কেশপুর থানার পুলিশের বক্তব্য, মামদুল মঙ্গলবার পথ দুর্ঘটনায় জখম হন এবং বুধবার কলকাতায় চিকিৎসা চলাকালীন তিনি মারা যান। কিন্তু তাঁর পরিজন ও গ্রামবাসীদের অভিযোগ, স্ত্রীর প্ররোচনায় মামদুলকে কেশপুরে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে। কেশপুত থানা খুনের অভিযোগ নিচ্ছে না বলেই এদিন তাঁরা মৃতদেহ নিয়ে পথ অবরোধ করেন। বেলার দিকে পুলিশের আশ্বাসেই অবরোধ ওঠে এবং মৃতদেহ কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
মামদুল জরির কাজ করার পাশাপাশি ইঞ্জিন ভ্যান চালাতেন। তাঁর ছ’ বছরের একটি মেয়ে এবং তিন বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্ত্রী রবিনা বিবির সঙ্গে মামদুলের সম্পর্ক ভালো ছিল না। স্ত্রী বেশ কয়েক মাস হল দুই সন্তানকে নিয়ে কেশপুর থানার টাবাগেড়িয়ায় বাপের বাড়ি চলে যান। কোনও রকম যোগাযোগও ছিল না। স্ত্রী মামদুল এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতনের মামলা করেছেন। মামদুলের ভাই সামসুল হক বলেন, ১৭ নভেম্বর আমার বউদির এক জামাইবাবু আমাদের এলাকায় এসে দাদাকে জোর করে কেশপুরে নিয়ে চলে যায়। যেটা আমরা সেদিন কেউ জানতে পারিনি। ওই দিন রাতে দাদা বাড়ি না ফেরায় আমাদের সন্দেহ হয়, হয়তো বধূ নির্যাতনের কেসে পুলিশ দাদাকে গ্রেপ্তার করেছে। সেজন্য পুলিশেও দাদার নিরুদ্দেশের অভিযোগ করিনি। পরের দিন মঙ্গলবার সকালে বউদি ফোন করে আমাদের জানান, আকন্দির গোলাঘরের সামনে দাদা পথ দুর্ঘটনায় জখম হয়েছে। দাদাকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু সে বুধবার মারা যায়।
মামদুলের পরিবারের অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী এবং স্ত্রীর প্রেমিক চক্রান্ত করে মামদুলকে কেশপুর নিয়ে গিয়ে খুন করেছে।
ভাগীরথপুরের বাসিন্দা তথা ভাগীরথপুর মৈত্রী সঙ্ঘের সদস্য সুবীর মান্না, হায়দার আলি, শেখ নাজির সহ প্রায় বহু মানুষ বৃহস্পতিবার কেশপুর থানায় গিয়ে খুনের অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন। সুবীরবাবু বলেন, কেশপুর থানা কোনও ভাবেই অভিযোগ নেননি। সেজন্যই এদিন মৃতদেহ রাস্তায় রেখে আমরা পথ অবরোধ করি। এদিনের পথ অবরোধে হিন্দু ও মুসলিম নির্বিশেষে বেশ কয়েক শ’ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। সুবীরবাবু বলেন, আমাদের এনিয়ে ঘাটাল থানা পূর্ণ সহযোগিতা করলেও কেশপুর থানা কোনও রকম গুরুত্ব দিচ্ছে না। খুনের বিষয়টি উড়িয়ে দিতে চাইছে।-নিজস্ব চিত্র