সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর: শুক্রবার অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম পঞ্চায়েতের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বরাদ্দ সরকারি অনুদান কংগ্রেসের পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ জাকির হোসেন নিজের আত্মীয়দের পাইয়ে দিয়েছেন। অনুদান প্রাপকদের তালিকায় প্রধানের এমন ৫০জন আত্মীয়ের নাম আছে। যদিও তাঁদের যেখানে বাড়ি, সেখানে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এদিন বিক্ষোভের খবর পেয়ে ফরাক্কা থানায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে পঞ্চায়েত অফিসের গেট খুলে দেয়। পঞ্চায়েত প্রধান অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন।
সম্প্রতি ভাঙন, বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে ফরাক্কা ব্লকের বেশ কয়েকটি এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যার জল ঢুকে অনেকের বাড়িঘর পড়ে গিয়েছে। কোথাও কোথাও চাষের মাঠে জল জমে চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। গঙ্গার ভাঙনের কবলে পড়ে অনেককে ভিটেছাড়া হতে হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মোট ৫৩২জনকে অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের ১লক্ষ ২০হাজার ও কম ক্ষতিগ্রস্তদের ৭০হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়। বেনিয়াগ্রাম পঞ্চায়েতে অনুদানপ্রাপকদের তালিকায় ১৫২জনের নাম রয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, তার মধ্যে ৫০জনই প্রধানের আত্মীয়।
তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মীর শাজাহান আলি বলেন, জনপ্রতিনিধি হয়েও আমরা অনুদানের বিষয়টি জানতে পারলাম না। সেখানে প্রধানের ৫০জন আত্মীয় কীভাবে এই অনুদান পায়? তাঁর এলাকায় কোনও ভাঙন হয়নি। বন্যা বা অতিবৃষ্টিতে জলও জমেনি। যোগ্যদের বঞ্চিত করে এই অনুদানের তালিকা তৈরি হয়েছে। এর প্রতিবাদে আমরা আরও বড় আন্দোলন গড়ে তুলব।
প্রধান বলেন, তিনমাস আগে এই তালিকা তৈরি হয়েছে। তখন কেউ ভালো করে বিষয়টি জানত না। আমাকে শেষদিন জানানো হয়। আমি যথাসাধ্য মানুষকে বিডিও অফিসে গিয়ে আবেদন করতে বলি। এখন অনুদানের পরিমাণটা বেশি জানতে পেরে ওদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। পুরো ব্লকে কোথাও কোনও বিক্ষোভ নেই। আমি বিরোধী দলের প্রধান হওয়ায় ওরা পঞ্চায়েত বোর্ড ফেলার চেষ্টা করছে।
ফরাক্কার বিধায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রধান নিজের বাবা-মা, কাকা, ভাইবোন, শ্যালক সহ আত্মীয়দের নামে অনুদানের তালিকা তৈরি করেছে। এতে যোগ্যরা বঞ্চিত হয়েছেন। এটা ঠিক হয়নি। নিজস্ব চিত্র