নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: শুক্রবার সাতসকালে বাড়ির আবর্জনা ডাস্টবিনে ফেলতে এসেছিলেন এক প্রৌঢ়। আচমকা বাইকে চেপে আসা দুই যুবক তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। কান ঘেঁষে সেই গুলি বেরিয়ে যাওয়ায় বরাত জোরে রক্ষা পেয়েছেন বিকাশ মজুমদার নামের এক সরকারি কর্মী। তবে বারুদের ঝলসানিতে অল্প বিস্তর জখম হয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আক্রান্তের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি এলাকাবাসীর সঙ্গেও কথা বলেন বিধায়িকা সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বরানগর পুরসভার ডানলপ মোড় লাগোয়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৯, রবীন্দ্রনগরে এক আবাসনে থাকেন বিকাশবাবু। তিনি ট্রাম কোম্পানির (ডব্লুবিটিসিএল) কর্মী। পুরনো বাসিন্দা হওয়ায় এলাকার সকলেই তাঁকে চেনেন। ৫৩ বছর বয়সি বিকাশবাবুর স্ত্রী গৃহবধূ। একমাত্র ছেলে কলকাতা এয়ারপোর্টে অস্থায়ী পদে চাকরি করেন। এলাকায় নির্বিবাদী মানুষ বলেই তিনি পরিচিত। কারওর সঙ্গে ঝগড়া তো দূরের কথা, কোনওদিন মতান্তর হতেও দেখেননি কেউ। তাঁকে কী উদ্দেশ্যে গুলি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।
অন্যান্য দিনের মতো এদিন তিনি সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ বিকাশবাবু আবর্জনার বালতি নিয়ে আবাসন লাগোয়া নর্দান পার্কের ডাস্টবিনে ফেলতে গিয়েছিলেন। সেই সময় আচমকা বাইকে করে আসে দুই যুবক। তাদের মধ্যে একজন তাঁকে সামনে থেকে গুলি চালায়। মুহূর্তে তিনি মুখ সরিয়ে নিতেই কানের পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায় গুলি। এরপর আতঙ্কে চিৎকার করে দৌড়তে শুরু করেন। দুষ্কৃতীরাও বাইক নিয়ে চম্পট দেয়। বারুদের ঝলসানিতে বিকাশবাবুর বাঁ হাত, মুখ ও গলা কমবেশি জখম হয়েছে। একাধিক জায়গায় ফোস্কা পড়েছে। বিকাশবাবু বলেন, কারও সঙ্গে আমার বিবাদ বা শত্রুতা নেই। তাহলে কী উদ্দেশ্যে আমাকে খুনের চেষ্টা, বুঝতে পারছি না।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীদের মাথায় হেলমেট ছিল। গুলি চালিয়ে তারা বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। সম্ভবত তারা পাইপগান থেকে গুলি করেছে। তবে তা ঠিকমতো কাজ না করায় গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। আদৌ বিকাশবাবু টার্গেট ছিলেন, নাকি অন্য কাউকে তারা খুন করতে এসেছিল, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। কারও সঙ্গে বিকাশবাবুর শত্রুতা ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মুরলীধর শর্মা বলেন, তদন্ত চলছে। বরানগর থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছেন।