নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো: ‘চিংড়িঘাটা’ নিয়ে কলকাতা পুলিশের কথার খেলাপ, কোর্টে আরভিএনএল
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের অন্তর্গত চিংড়িঘাটায় বাকি থাকা কাজ শেষ করার জন্য কলকাতা পুলিশের ছাড়পত্র এখনও মেলেনি। এক্ষেত্রে তারা কথার খেলাপ করেছে। শুক্রবার এমনই অভিযোগ এনে কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করল নির্মাণকারী সংস্থা রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল)। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছে তারা।
আরভিএনএলের তরফে এদিন হাইকোর্টে দাবি করা হয়, রাজ্য সরকার অসহযোগিতা করছে। কখনও বলছে ইডেনে টেস্ট ম্যাচ রয়েছে, আবার কখনও ম্যারাথনের কথা বলা হচ্ছে। এ ধরনের নানা যুক্তি হাজির করে রাস্তা বন্ধ রাখার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। ফলে কাজ থমকেই রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করুক আদালত। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার জানিয়েছে, এ বিষয়ে আদালতের কাছে লিখিতভাবে বক্তব্য জানাক আরভিএনএল। তারপরই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত।
নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে কলকাতা পুলিশের ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ছিল। চিংড়িঘাটা নিয়ে হাইকোর্টে এক জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে মেট্রো ভবনে সব পক্ষের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের পদস্থ কর্তারা। কিন্তু কোনও এক রহস্যজনক কারণে সেই ছাড়পত্র এখনও দেয়নি পুলিশ। ফলে চিংড়িঘাটায় বাকি থাকা মেট্রোর কাজ নিয়ে নতুন করে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, নির্মীয়মাণ নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো রুটের অন্তর্গত চিংড়িঘাটাতে মাত্র ৩৬৬ মিটার অংশের কাজ বাকি। সামান্য এই অংশ জুড়ে গেলে নিউ গড়িয়া থেকে সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করতে পারবে। এতে তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরের কর্মীদের পাশাপাশি নিউটাউন, সল্টেলেকের কয়েক লক্ষ বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের উপকার হবে। তেমনই বাইপাসের উপর যানবাহনের চাপও কমবে। বর্তমানে এই রুটে নিউ গড়িয়া থেকে বেলেঘাটা বা বর্তমান ভবন পর্যন্ত মেট্রো চলাচল করছে।
কিন্তু কলকাতা পুলিশ নানা অছিলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আরভিএনএল-কে ছাড়পত্র দিচ্ছে না। দেখতে দেখতে বছর শেষ হতে চলল। তবুও কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের কর্তাদের ঘুম ভাঙেনি বলে অভিযোগ। এমনকি, এই ছাড়পত্রের জন্য কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ আরভিএনএল-কে চিড়িংঘাটাতে আন্ডারপাস, গৌরকিশোর ঘোষ স্টেশন চালু না করার মতো কিছু শর্ত বেঁধে দিয়েছিল। জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে সব পক্ষের বৈঠকে সেই শর্ত অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছিলেন মেট্রোকর্তারা। তবুও কোনও এক অজানা কারণে ছাড়পত্র আটকে রেখে কলকাতাকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন লালবাজারের কিছু শীর্ষকর্তা—এমনটাই অভিযোগ। এনিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে কলকাতা পুলিশের ডিসি (ট্রাফিক) ওয়াই এস শ্রীকান্তকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।