মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে মেডিকেলে চিকিৎসা সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত বিএলও তপতীর
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া ও বরানগর: এসআইআর’য়ের কাজের মাত্রাতিরিক্ত চাপ। কোন্নগরে সে কারণে সেরিব্রাল স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিএলও তপতী বিশ্বাস। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুক্রবার তাঁকে কলকাতার মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। কামারহাটিতে এক রিকশচালক এসআইআর আতঙ্কে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। এদিন তাঁর বাড়ি যান বিধায়ক ও তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। পাশে থাকার আশ্বাস দেন রিকশচালকের পরিবারকে।
বৃহস্পতিবার রাতেই তপতীদেবীকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তারপর দ্রুত স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁর পরিজনদের সঙ্গে দীর্ঘসময় ফোনে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিকতায় আপ্লুত তপতীদেবীর পরিবার। চিকিৎসক সূত্রে জানা গিয়েছে, তপতীদেবীর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁকে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা করছেন। কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে স্বাস্থ্যদপ্তরের এক কর্তা ফোন করেছিলেন। তারপর বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তত্ত্বাবধানে তপতীদেবীকে কলকাতায় মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’ চেয়ারম্যান জানান, তপতীদেবী অসুস্থ হওয়ার পর পুরসভার হাসাপাতালে যথাসাধ্য চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। ওই পরিবারের আর্থিক অবস্থা স্থিতিশীল নয়। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী পদক্ষেপ করায় পরিবারটি স্বস্তি পেয়েছে। তপতীদেবীর স্বামী স্থানীয় একটি জুটমিলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। নাম প্রবীর বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী কাজের চাপেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। আমাদের আর্থিক সামর্থ্য খুবই কম। স্ত্রী অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর কাজ করেন। সেটাই আমাদের বড় ভরসা। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।’ কোন্নগরের নবগ্রামের বাসিন্দা তপতীদেবী উত্তরপাড়া বিধানসভার একটি বুথের বিএলও হিসেবে কাজ করছিলেন। বুধবার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কোন্নগর পুরসভা তাঁর চিকিৎসার উদ্যোগ নেয়। পরে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে ধরা পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতেই তপতীদেবীর চিকিৎসায় হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
অন্যদিকে কামারহাটিতে ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কামারহাটি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের অশোক সর্দার। তাঁর দু’পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। শুক্রবার তাঁর বাড়ি যায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা, সিআইসি সৌমিত্র পুততুণ্ড সহ তৃণমূলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা ছিলেন দলে।
এদিন কান্নায় ভেঙে পড়েন অশোকবাবুর পরিবারের সদস্যরা। তাঁর মেয়ে চৈতালি সরকার বলেন, ‘বাবা সারাজীবন রিকশ চালিয়ে এসেছেন। এখন দু’পা নেই। আমাদের পরিবারের অবস্থা ভালো নয়। বিধায়ককের কাছে কৃত্রিম পা ছাড়াও সরকারি প্রকল্পে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছি।’
বিধায়ক বলেন, ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। নির্বাচন কমিশনের চাপে কি ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন বাংলার খেটে খাওয়া মানুষ। এই রিকশচালক সারাজীবন কাজ করে তিন মেয়েকে এম এ পাশ করিয়েছেন। বিয়েও দিয়েছেন। তার মতো মানুষও আতঙ্কে আত্মহত্যা করতে যেতে বাধ্য হচ্ছেন! আমরা সমস্তরকমভাবে পরিবারের পাশে রয়েছি। লড়াই আন্দোলনেও পথে থাকব।’