কয়লা পাচারের তদন্তে এবার বাংলা ও ঝাড়খণ্ডে ৪০টির বেশি স্থানে ইডি হানা
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা, আসানসোল ও সংবাদদাতা, রঘুনাথপুর: অবৈধ কয়লা ও বালি কারবারের তদন্তে শুক্রবার একযোগে বাংলা ও ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় মেগা তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এদিনের তল্লাশিতে বড় অঙ্কের নগদ টাকা ও সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, এদিন বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে প্রতিবেশী দুই রাজ্যে সবমিলিয়ে ৪০টিরও বেশি জায়গায় হানা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকরা। সকাল ছ’টায় শুরু হয় তল্লাশির সেই পর্ব। তাতে অংশ নেন সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ জন ইডি আধিকারিক ও কর্মী। ইডির এই টিমগুলির সঙ্গে ছিলের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জওয়ানরা। তবে নিরাপত্তার এই ব্যবস্থা সত্ত্বেও নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয় ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে। ইডি আধিকারিদের বাধা দিতে বাড়ির পোষা কুকুর ছেড়ে দেন কয়লার ঠিকাদার এল বি সিং। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা পরিস্থিতি সামাল দেন।
এদিন ভোর ৫টারও আগে কুলটি থানার ডুবুরডিহি চেকপোস্টের কাছে এক অফিসে হানা দেন ইডির অফিসাররা। ওই চালা ঘর থেকেই তাঁরা সিন্ডিকেটের বহু নথি, ল্যাপটপ পান। কয়লা পাচার কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়া নারায়ণ খাড়কার দুর্গাপুরের বিধাননগরে বিলাসবহুল আবাসনে অভিযান চালান ইডির অফিসাররা। তার এক অ্যাকাউনটেন্টের বাড়িতেও অভিযান চলে। কয়লা পাচার ও কয়লার ডিওর সিন্ডিকেট নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠে এসেছে দুর্গাপুরের ব্যবসায়ী লোকেশ সিংয়ের বিরুদ্ধে। সিটি সেন্টারে তাঁর অফিস ও মেনগেটে বাড়িতে চলে অভিযান।
পাণ্ডবেশ্বর থানা এলাকার যুধিষ্ঠির ঘোষের অট্টালিকাতেও অভিযান হয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে তাঁর বাড়ি। সুন্দর ভালোটিয়ার রানিগঞ্জের বাড়ির পাশাপাশি তাঁর একদা পাটর্নার চিন্ময় মণ্ডলের বাড়িতেও ইডি অভিযান চালিয়েছে। দু’জনেই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে কারবারের ‘মহারথী’ হয়ে উঠেছে। অভিযান হয়েছে বারাবনি বিধানসভা এলাকার ভানোরা কোলিয়ারি এলাকার শিশির ঘোষের অফিসেও। এদিনই সাতসকালে পাঁচটি গাড়ি নিয়ে দু’টি দলে বিভক্ত হয়ে ইডির অফিসাররা পুরুলিয়ার পাড়া থানা এলাকায় অভিযান চালান। সল্টলেকে দুই ব্যবসায়ীর বাড়িতে সকালেই হাজির হন তদন্তকারীরা। অন্য একটি টিম পৌঁছে যায় লেকটাউনে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতেও। হাওড়ার শলপেও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে অভিযান চলে। সবকটি জায়গা থেকেই বিপুল নথি উদ্ধার হয়েছে। ইডি তল্লাশির ইশ্যুতে শুক্রবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের খোঁচা, বাংলায় ভোট আসছে এটা বোঝা যাচ্ছে। প্রতিবার ভোট এলেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির তৎপরতা বেড়ে যায়। সেটাই শুরু হয়ে গিয়েছে। তারপরও বাংলার মানুষ বিজেপিকে বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করবে ২০২৬ সালের ভোটে।