বিএলও অ্যাপ ক্র্যাশের ভূরিভূরি অভিযোগ, গা করছে না নির্বাচন কমিশন, ফর্ম আপলোড ২৮শের মধ্যে শেষ করার ফতোয়া
বর্তমান | ২২ নভেম্বর ২০২৫
শুভঙ্কর বসু, কলকাতা: ৪ ডিসেম্বরের সময়সীমা শুধু বিজ্ঞাপনেই! আদতে ইনিউমারেশন ফর্ম আপলোড বা ডিজিটাইজেশনের কাজ শেষ করতে হবে আগামী ২৮ নভেম্বরের মধ্যে। এমনই ফতোয়া দেওয়া হল বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও)। সূত্রের খবর, মূলত জেলাগুলি থেকে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার বা ইআরওদের তরফে মৌখিকভাবে এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তরফে কি এই সংক্রান্ত কোনও লিখিত নির্দেশ এসেছে? ইআরওদের কাছে তা জানতে চাওয়া হলেও জবাব মেলেনি। ফলে নতুন করে সুর চড়িয়েছেন বিএলওরা।
এই পরিস্থিতিতে সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলেছে বিএলও অ্যাপ। শুক্রবার সকাল থেকেই সেটি বারবার ‘ক্র্যাশ’ করে যায়। এই অ্যাপ ব্যবহার করেই ভোটারদের পূরণ করা ইনিউমারেশন ফর্ম আপলোড বা ডিজিটাইজেশনের কাজ করছেন বিএলও-রা। তাঁদের অভিযোগ, নির্ধারিত সময়ের ছ’দিন আগে কাজ শেষের ফতোয়া জারি করা হলেও সকাল কিংবা প্রায় দিনভর অ্যাপটিতে কিছু করা যাচ্ছে না। শুধুমাত্র রাতের দিকে সেটি ঠিকঠাক কাজ করছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন ভূরি ভূরি অভিযোগ আসছে। সাধারণত নিজের ফোন নম্বর দিয়ে অ্যাপে ‘লগ ইন’ করতে হয় বিএলওদের। সেক্ষেত্রে প্রতিবার কমিশনের তরফে একটি ওটিপি পাঠানো হয়। সেটি টাইপ করলে তবেই অ্যাপে ঢোকা যায়। অভিযোগ, এদিন সকাল থেকে অ্যাপে ‘লগ ইনে’র সময় একাধিকবার ফোন নম্বর দেওয়া হলেও ওটিপি আসেনি। একাধিকবার এমনটা হওয়ার পর এক সময় ‘লগ-ইন’ অপশনই কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
বিএলওদের দাবি, এব্যাপারে সুপারভাইজারদের কাছে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও স্পষ্ট উত্তর মিলছে না। যেমন উত্তর মেলেনি নির্ধারিত সময়ের ছ’দিন আগে কাজ শেষ সংক্রান্ত ফতোয়ার লিখিত নির্দেশের কপি নিয়েও। সুপারভাইজারদের সাফ কথা, ইআরও বা এইআরওদের তরফে যেমন যেমন নির্দেশ মিলছে, তেমনটাই জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এদিন সকালে সংশ্লিষ্ট সুপারভাইজারদের কাছে লিখিত নির্দেশের কপি চেয়ে ফোনে যোগাযোগ করেন যাদবপুর বিধানসভার প্রায় ৩৫০ জন বিএলও। কিন্তু তেমন কোনও কপি তাদের দেওয়া হয়নি। বিএলওর কাজে নিযুক্ত অঙ্কের শিক্ষক প্রশাম্ত চৌধুরি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে কাজ শেষ করতে বলা হলেও তার কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই। অ্যাপ ঠিকঠাক কাজ না করলে এই বিপুল কাজ সময়ে শেষ করা কীভাবে সম্ভব? বন্দুক দেওয়া হয়েছে, কিন্তু গুলি নেই। অবস্থাটা খানিকটা এরকমই।’
এসআইআর বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অবশ্য ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএলওদের এই কাজ শেষ করার কথা। বাড়তি কোনও সময় দেওয়া হবে না। এদিন নিউটাউনে ডিইওদের নিয়ে ইভিএম চেকিং কর্মশালায় সেকথা স্পষ্ট দিয়েছেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী। তা সত্ত্বেও কেন জেলা প্রশাসনগুলির তরফে ছ’দিন আগে সেই কাজ শেষ করার মৌখিক নির্দেশ কেন? ধন্দে বিএলওরা।