সরস্বতী-দূষণ নিয়ে রাজ্যের রিপোর্টে ‘ঘাটতি’, দু’মাসে পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দিতে নির্দেশ
আনন্দবাজার | ২২ নভেম্বর ২০২৫
সরস্বতী নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রাজ্য সরকারের দাখিল করা ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’-এ তথ্যগত ঘাটতি রয়েছে। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে এমনটাই জানিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত। আদালতের মতে, রাজ্যের তরফে জমা দেওয়া হলফনামায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য যথাযথ ভাবে উপস্থাপিত হয়নি। সে কারণে আদালত রাজ্যকে যথাযথ তথ্য সংবলিত একটি রিপোর্ট ফের দাখিল করতে বলেছে। রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে, একটি ‘আপডেটেড অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ জমা দিতে অতিরিক্ত দু’মাস প্রয়োজন। সেই সময় মঞ্জুর করেছে আদালত।
পরিবেশকর্মীদের একাংশের মতে, গঙ্গা-সহ রাজ্যের সব নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণের কাজে আদৌ কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তার কোনও নির্ভরযোগ্য চিত্র ধারাবাহিক ভাবে রাজ্যের তরফে দাখিল করা রিপোর্টগুলিতে থাকে না। সরস্বতী নদীও তার ব্যতিক্রম নয়।
সেই পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, দু’মাসের মধ্যে যে ‘আপডেটেড রিপোর্ট’ জমা দেওয়া হবে, তাতে নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণে ইতিমধ্যে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে বা প্রস্তাব রয়েছে, সেই তথ্য অবশ্যই রাজ্যকে বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করতে হবে। এর পাশাপাশি, সরস্বতী নদীতে মোট কত পরিমাণ অশোধিত বর্জ্য গিয়ে মিশছে, সেই বর্জ্য ক’টি নিকাশি নালা থেকে যাচ্ছে, এলাকায় মোট কত কঠিন বর্জ্য সৃষ্টি হচ্ছে, কোন প্রকল্পের কাজ কোন পর্যায়ে আছে, প্রতিটি প্রকল্পের বাজেট বরাদ্দ, প্রকল্প সম্পূর্ণ করার সম্ভাব্য সময়সীমা, প্রকল্প কার্যকর রাখতে কোন কোন আধিকারিক তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন— উল্লেখ করতে হবে এমন একাধিক খুঁটিনাটি তথ্যও। এ ছাড়াও, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পূর্ণ না হলে তার দায় নির্ধারণ করে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা-ও জানতে চেয়েছে আদালত।
যার উল্লেখ করে পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, আদালতের মন্তব্যে স্পষ্ট, এমন ভাবে দায়সারা তথ্য দাখিল করা হলে নদী বাঁচানোর প্রকৃত কাজ কতটা এগোচ্ছে, তা বোঝা সম্ভব নয়। মামলার আবেদনকারী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘রাজ্যের কাছ থেকে আদালত যে গুরুত্ব বা স্বচ্ছতা প্রত্যাশা করে, তা এই রিপোর্টে অনুপস্থিত।’’ মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি।