• অনলাইনে আর্থিক লেনদেন জেলে বসেই, এসটিএফের হেফাজতে অভিযুক্ত
    আনন্দবাজার | ২২ নভেম্বর ২০২৫
  • মাদক মামলায় জেলে থাকা এক অভিযুক্তের সঙ্গে তার পরিবারের কয়েক জনের বেআইনি আর্থিক লেনদেনের যোগসূত্র মিলেছিল। অভিযোগ, অনলাইনে সেই লেনদেন হয়েছিল একাধিক বার। সেই অনলাইন লেনদেনের নেপথ্যের কারণ জানতে এ বার জেলবন্দি ওই অভিযুক্তকে হেফাজতে নিল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।

    সূত্রের খবর, বারাসত আদালতের নির্দেশে শুক্রবার সাবির আহমেদ নামে ওই বন্দিকে পাঁচ দিনের জন্য হেফাজতে নিয়েছেন গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে, সাবিরের বাড়ি নদিয়ার পলাশিপাড়ায়। ২০২৩ সালে এসটিএফের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে দমদম জেলে বন্দি ছিল সে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি মাদক মামলার সূত্রে তদন্তকারীরা মনে করছেন, সাবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। সেই সূত্রেই তাকে হেফাজতে নিতে চেয়ে বুধবার বারাসত আদালতে আবেদন করেন তাঁরা। শুক্রবার ওই আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট লেনদেনের সঙ্গে কোনও জঙ্গি-সংস্রব আছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে বলে সূত্রের দাবি।

    সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে দমদম জেলেই বন্দি থাকা অন্য এক অভিযুক্তকে (জঙ্গি মামলায় গ্রেফতার হওয়া) চিরকুটে কিছুলিখে পাঠাতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় সাবির। তার পরেই রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা তদন্তে নেমে জানতে পারেন ওই আর্থিক লেনদেনেরকথা। আদালত সূত্রের খবর, মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়া সাবিরের নাম করে কয়েক দফায় পাঁচ থেকে দশ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে নির্দিষ্ট একটি অ্যাকাউন্টে। ওই টাকা পাঠিয়েছেন সাবিরের এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। তাঁকে ইতিমধ্যেই আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা।

    সূত্রের দাবি, জেরায় ওই আত্মীয় টাকা পাঠানোর কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু, কী কারণে ওইটাকা পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতেই সাবিরকে জেরা করতে চাইছেন গোয়েন্দারা। সেইকারণে তাকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে খবর। দরকারে ওই আত্মীয়ের সঙ্গে সাবিরকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে প্রকৃত তথ্য জানতে চাইছেন গোয়েন্দারা। তবে, ওই টাকা কোথায় গিয়েছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে তাঁদের মনে। সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে সাবিরের সঙ্গে আরও কয়েক জনকে জেরা করতে চাইছেন তাঁরা।

    তদন্তকারীরা জানান, সাবির নদিয়া-মুর্শিদাবাদে মাদক পাচার চক্রের অন্যতম পান্ডা। উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে মাদকের যেকাঁচামাল আসে, তা শিলিগুড়ি থেকে দখল নিত সে এবং তার দলবল। সেই কাঁচামাল সোজা নিয়েআসা হত নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন জায়গায়। সেখানে ওইকাঁচামালের সঙ্গে রাসায়নিক মিশিয়ে তৈরি করা হত হেরোইন। সব শেষে, ওই মাদক সাবির নিজের গাড়িতে করে পৌঁছে দিত উত্তর ২৪পরগনা, হাওড়া, হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলায়।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)