• কে পরিকল্পনা করল? টাকা নিয়ে কেন ঝগড়া হলো? দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডের জেরায় চাঞ্চল্যকর দাবি ধৃত চিকিৎসকের
    এই সময় | ২২ নভেম্বর ২০২৫
  • শুধু দিল্লি বিস্ফোরণ নয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল ‘হোয়াইট কলার টেরর’ মডিউলের। সলতে পাকানোর কাজটা শুরু হয়েছিল দু’বছর আগে, অর্থাৎ ২০২৩ সালে। পরিকল্পনা, বিস্ফোরক জোগাড়, আত্মঘাতী হামলা কারা করবে - সব। দিল্লি বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃত চিকিৎসক মুজাম্মিল শাকিল গনাইকে জেরা করে এমনই সব বিস্ফোরক তথ্য জানতে পেরেছেন NIA-এর গোয়েন্দারা। তাঁদের দাবি, গোটা দেশে আতঙ্ক ছড়াতে বিভিন্ন শহরে সিরিয়াল ব্লাস্ট করানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন ধৃতরা।

    ১০ নভেম্বর সোমবার জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানা পুলিশের যৌথ দল ফরিদাবাদ থেকে প্রায় ২৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করে। এই বিস্ফোরকের অধিকাংশটাই ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। বোমা তৈরির অন্যতম উপকরণ। এই ঘটনাতেই মুজাম্মিল শাকিল গনাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন সন্ধ্যাতেই লালকেল্লার সামনে গাড়ি বিস্ফোরণ হয়। চালকের আসনে ছিলেন উমর উন নবি। তিনিইছিলেন আত্মঘাতী জঙ্গি। তাঁর সঙ্গে মুজাম্মিলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এক পরে গত বৃহস্পতিবার তাঁকে হেফাজতে নেয় NIA। শুরু হয় জেরা। তাতেই উঠে আসছে বিস্ফোরক সব তথ্য।

    জেরায় তদন্তকারীদের মুজাম্মিল জানিয়েছেন, মূলত বিস্ফোরকের মশলা জোগাড় করাই ছিল তাঁর দায়িত্ব। গুরুগ্রাম এবং নুহ থেকে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে এনপিকে সার কিনেছিলেন মুজাম্মিল। কিনেছিলেন ইলেকট্রনিক কম্পোনেন্টও। সমস্ত রাসায়নিক যাতে ঠিকঠাক থাকে, তার জন্য জোগাড় করেছিলেন একটি ডিপ ফ্রিজও। এই সব সার এবং অন্যান্য পদার্থ থেকে বিস্ফোরক তৈরির দায়িত্ব ছিল আত্মঘাতী জঙ্গি উমরের উপরে। একাধিক মিল থেকে সার পিষে ইউরিয়া তৈরি করেছিলেন তিনি।

    উমর, মুজাম্মিলরা দিল্লি বিস্ফোরণের সমস্ত খরচা নিজের পকেট থেকেই দিয়েছিলেন বলেও দাবি NIA তদন্তকারীদের। বিস্ফোরক এবং অন্য সামগ্রী কেনার জন্য মোট ২৬ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন তাঁরা। আত্মঘাতী জঙ্গি উমর নিজে দিয়েছিলেন ২ লক্ষ টাকা। মুজাম্মিল দিয়েছিলেন ৫ লক্ষ। দিল্লিতে বিস্ফোরণের জন্য উমরের হাতে ৫ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন জৈশের মহিলা শাখার নেত্রী শাহিন শাহিদও। আদিল রাঠির আর মুজাফ্ফর রাঠির দিয়েছিলেন যথাক্রমে ৮ এবং ৬ লক্ষ টাকা। টাকা নিয়ে উমর আর মুজাম্মিলের মধ্যে একবার ঝগড়াও হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে। প্রত্যেকেই আপাতত NIA হেফাজতে।

    জম্মু-কাশ্মীরের সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক আদিল রাঠিরের লকার থেকে একটি একে ৪৭ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ৬.৫ লক্ষ টাকা দিয়ে সেই রাইফেল কিনেছিলেন মুজাম্মিল। জেরায় এ কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, জেরায় তাঁদের হ্যান্ডলারের নামও জানিয়েছেন মুজাম্মিল। তাঁর হ্যান্ডলার ছিল মনসুর নামে এক যুবক। আর উমর হাশিম নামে এক হ্যান্ডলারের হয়ে কাজ করতেন। ওকাসা নামে এক ব্যক্তির নির্দেশে আদিল আর মুজাফ্ফরের সঙ্গে তুরস্কেও গিয়েছিলেন মুজাম্মিল। এই ওকাসা ছিল পাকিস্তানের তেহরিক-ই-তালিবান (টিটিপি)-এর সদস্য। ফলে দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে পাকিস্তানের যোগও রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

  • Link to this news (এই সময়)