• ‘মরতে বাধ্য করল’, সুইসাইড নোটে কমিশনকে দায়ী করে কৃষ্ণনগরে ‘আত্মঘাতী’ BLO
    প্রতিদিন | ২২ নভেম্বর ২০২৫
  • সঞ্জিত ঘোষ, কৃষ্ণনগর: মহিলা বিএলও-র অস্বাভাবিক মৃত্যু। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে স্পষ্ট নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন ওই মহিলা। কাজের অত্যধিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে এমন চরম সিদ্ধান্ত বলে ওই সুইসাইড নোটে লিখে রেখেছেন তিনি। কৃষ্ণনগরের ষষ্ঠীতলা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

    নিহত ওই মহিলা রিঙ্কু তরফদার। বছর চুয়ান্নর ওই মহিলা চাপ়়া বাঙালঝি স্বামী বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পার্শ্বশিক্ষক। চাপড়া ২ নম্বর পঞ্চায়েতের ২০১ নম্বর বুথের বিএলও ছিলেন। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে। ওই নোটে তিনি লেখেন, “আমি বাঁচতে চাই। আমার সংসারে কোন অভাব নেই। কিন্তু এই সামান্য চাকরির জন্য এরা আমাকে এভাবে ভরাডুবির মাধ্যমে মরতে বাধ্য করল।”

    নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে তিনি ‘সুইসাইড নোটে’ লেখেন, “আমার এই পরিণতির জন্য নির্বাচন কমিশন দায়ী। আমি কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করি না। খুবই সাধারণ মানুষ। কিন্তু এই অমানুষিক কাজের চাপ আমি নিতে পারছি না। আমি একজন পার্শ্বশিক্ষিকা। বেতন পরিশ্রমের তুলনায় খুবই কম কিন্তু এরা আমাকে ছাড় দিল না। অফলাইন কাজ আমি ৯৫ শতাংশ শেষ করে ফেলেছি। কিন্তু অনলাইনে আমি কিছুই পারি না। বিডিও অফিসে এবং সুপারভাইজারকে জানানো সত্ত্বেও কোনও ব্যবস্থা করল না। ২০১ নম্বর পার্টে কেউ ছিল না বলে আমায় কাজ চাপিয়ে দিল। কিন্তু পরে অন্য পার্টের অনেককে অন্য পার্টে বিএলও হিসাবে নিয়োগ করেছে।” ‘সুইসাইড নোটে’ সবশেষে লেখেন, “এখন আমার সুখের সময় কিন্তু এরা আমাকে বাঁচতে দিল না। কাজটা অনেকের কথা শুনে রাখতে গেলাম। এখন মনে হচ্ছে ছেড়ে দেওয়াটাই ভালো ছিল। ফোন রেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে বলে ছেড়েও কাজ হত না।”

    এই ঘটনায় সোশাল মিডিয়ায় তোপ দেগেছে তৃণমূল। শাসক শিবিরের দাবি, “নির্বাচন কমিশনের জটিল ডিজিটাল প্রক্রিয়া, অবাস্তব সময়সীমা, শাস্তির আতঙ্ক ও রাতভর তদারকির নামে যে মানসিক নির্যাতন কর্মীদের ওপর চাপানো হচ্ছে-তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।” 

    বলে রাখা ভালো, এসআইআর আবহে একাধিক বিএলও-র প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। তার প্রতিবাদে মিছিলও করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)