থামবে না এসআইআর, অসুস্থ বিএলও-র কাজ করছে নাবালক ছেলে! বিতর্ক জলপাইগুড়িতে
প্রতিদিন | ২২ নভেম্বর ২০২৫
শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: এসআইআর শুরু হতেই একেরপর এক আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে বাংলায়। কাজের চাপে অসুস্থ হয়েছে বহু বিএলও। যদিও, এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নেয়নি বলেই দাবি রাজনৈতিক দলগুলির। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে চিঠিও লিখেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
এবার ফের বিএলও-র অসুস্থ হওয়ার খবর সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, অসুস্থ বিএলও-র জায়গায় দায়িত্ব পালন করছে তাঁর নাবালক ছেলে। এসআইআর ফর্মে সাক্ষরও করছে সে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা ঘটেছে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বেরুবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের খান সাহেব পাড়া বুথে। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন এলাকার বাসিন্দারা। চেপে ধরতেই ‘নাবালক বিএলও’র দাবি, ‘এসআইআর ফর্ম জমা দিলে দেবে না দিলে না দেবে।’
জানা গিয়েছে, ১৭/১৮০ নম্বর এই বুথের বিএলও অঞ্জুওয়ারা বেগম। এসআইআর শুরুর দিন কয়েক পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তারপর থেকেই মায়ের কাজের দায়িত্ব পালন করছে ছেলে আরিফ রহমান। জানা গিয়েছে আরিফের বয়স ১৭ বছর। ফর্ম জমা নিচ্ছে সে। মায়ের হয়ে বিএলও-র সাক্ষরও করছে সে নিজেই। আর এই ঘটনা জানা যেতেই এখন চিন্তায় গোটা গ্রাম। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘আমরা ফর্ম পূরণ করে জমা করার জন্য বলও-র নম্বরে ফোন করেছিলাম। ফোন তোলেন তাঁর ছেলে। ছেলে জানান মা অসুস্থ হওয়ায় তাঁর কাছেই জমা দিতে হবে ফর্ম।’ তাঁদের দাবি, অসুস্থ বিএলও-কে বদলে নতুন বিএলও দিক কমিশন।
অন্যদিকে, শনিবার সকালে বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় মহিলা বিএলও-র দেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে। যাতে স্পষ্ট নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করেছেন ওই মহিলা। কাজের অত্যধিক চাপ সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে এমন চরম সিদ্ধান্ত বলে ওই সুইসাইড নোটে লিখে রেখেছেন তিনি। এই ঘটনায় সোশাল মিডিয়ায় তোপ দেগেছে তৃণমূল। শাসক শিবিরের দাবি, “নির্বাচন কমিশনের জটিল ডিজিটাল প্রক্রিয়া, অবাস্তব সময়সীমা, শাস্তির আতঙ্ক ও রাতভর তদারকির নামে যে মানসিক নির্যাতন কর্মীদের ওপর চাপানো হচ্ছে-তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।”
শনিবার এক্স হ্যান্ডল পোস্টে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘এসআইআরের চাপে এভাবে আর কত জীবন নষ্ট হবে? আর কত মৃতদেহ গুনতে হবে? এটা এবার অত্যন্ত গুরুতর ব্যাপার হয়ে উঠছে।’