বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই বাংলাদেশ সীমান্তে তৎপর সেনাবাহিনী। যেকোনও রকম অনুপ্রবেশ রুখতে কড়া নজরদারি চালাচ্ছে সেনা। অন্যদিকে, লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি) প্রধান হাফিজ সইদ বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের একটি নতুন ফ্রন্ট খোলার পরিকল্পনা করছেন। তার এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে সেখানে পাঠানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় পশ্চিমবঙ্গের ‘চিকেনস নেকে’র সুরক্ষা নিয়ে বিশেষ বৈঠক চলছে শিলিগুড়িতে।
জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়িতে রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা, এসআইবি-র দপ্তরে শুরু হয়েছে উচ্চপদস্থ বৈঠক। বৈঠকে উপস্থিত রয়েছে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিরা। সঙ্গে রয়েছে বায়ুসেনা, এসএসবি এবং সেনা গোয়েন্দা বিভাগ। একই সঙ্গে উপস্থিত রয়েছেন উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ যাদব, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর, উত্তর-পূর্ব রেলের প্রতিনিধি এবং ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, নেপালে নতুন করে শুরু হওয়া অস্থিরতা, পশ্চিমবঙ্গের এসআইআর আবহ এবং চিকেনস নেক নিয়ে বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের কারণে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সীমান্ত অঞ্চলে। নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে, শিলিগুড়ি করিডোরের মাধ্যমে বাংলায় মাদক, জাল নোট পাচারের চেষ্টা চলছে।
কিছুদিন ধরেই পাকিস্তানের সঙ্গে সখ্য বাড়াচ্ছেন ইউনুস। ঢাকায় পাকিস্তানের জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ কমিটির (সিজেসিএসসি) চেয়ারম্যান, জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। সেই সাক্ষাতেই ফের একবার কূটনৈতিক বিতর্কের ঝড় তোলেন ইউনুস। জেনারেল সাহির শামশাদকে একটি বিতর্কিত মানচিত্র উপহার দিয়েছেন ইউনুস। সেই মানচিত্রে ভারতের অসম এবং অন্যান্য উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে বাংলাদেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর পরেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে। নড়েচড়ে বসে ভারত। ‘চিকেনস নেকে’র সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে বিএসএফ, সিআরপিএফ, আইটিবিপি, এসএসবি এবং সিআইএসএফ-এর মত বিভিন্ন আধাসেনা বাহিনীকে তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চিকেনস নেকের সুরক্ষার জন্য হাসিমারা এবং বাগডোগরার বিমানঘাঁটিকেও তৈরি থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
সিকিমের সঙ্গে থাকা চিন সীমান্ত এবং পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে থাকা বাংলাদেশ সীমান্তের সুরক্ষায় থাকা সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কোরকে অ্যালার্ট করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, পাহাড়ের উপরের অংশে নজরদারি চালানোর জন্য ড্রোনের ব্যবহার শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এছাড়াও ধুবড়ির কাছে বামুনি, কিষণগঞ্জ এবং চাপড়ায় তিনটি সামরিক ঘাঁটি তৈরির কাজ চলছে। সেই কাজের গতি বৃদ্ধির দিকেও নজর দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।