নয়াদিল্লি: আল-ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়। দিল্লি বিস্ফোরণের পর থেকেই চর্চায় হরিয়ানার ফরিদাবাদে অবস্থিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তদন্তে উঠে এসেছে, আল-ফালাহকে কেন্দ্র করেই তৈরি হয়েছিল জঙ্গিদের ‘মেডিকেল মডিউল’। সেখানকার হস্টেলে বসেই বিস্ফোরণের ছক কষেছিল দুই চিকিত্সক-শিক্ষক। জঙ্গিদের সঙ্গে নাম জড়াতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বিপদে পড়েছেন কয়েকশো সাধারণ পড়ুয়া। বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করবেন, তা নিয়ে সম্পূর্ণ আতান্তরে তাঁরা। আপাতত ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে শুরু করেছেন অনেকে। শনিবার ডাক্তারির এক স্নাতকোত্তর পড়ুয়া যেমন বললেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে জঙ্গিদের ঘাঁটি বলা হচ্ছে। এটা নাকি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু যারা কেরিয়ারের জন্য এখানে ভর্তি হয়েছিল, তাদের কী হবে?’ উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ওই পড়ুয়া বললেন, ‘যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে নিটের জন্য পাঁচ বছরের লড়াই, লক্ষ লক্ষ টাকা সব এক নিমেষে শেষ। আমরা ডাক্তার হলেও, কোনও হাসপাতাল ভরসা করবে না।’
শুধু ওই পড়ুয়া নয়, একই আতঙ্ক তাড়া করছে অন্য পড়ুয়াদেরও। অথচ ১০ নভেম্বরের আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিল আল-ফালাহ। অন্য বেসরকারি মেডিকেল কলেজের থেকে ফি কম হওয়ায় অনেক পড়ুয়াই সেখানে ভর্তি হতে চাইতেন। কিন্তু লালকেল্লার সামনে বিস্ফোরণের পরই বদলে গিয়েছে ছবিটা। ৪১৫ কোটি টাকা আর্থিক তছরুপের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জাভেদ আহমেদ সিদ্দিকিকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। তাই কাউকেই যেন ভরসা করতে পারছেন না পড়ুয়ারা। যদিও উপাচার্য দবি করেছিলেন, জঙ্গি যোগের অভিযোগে ধৃতদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের কোনও সম্পর্ক নেই। অভিযুক্তরা শুধুমাত্র সেখানে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত ছিল। চলতি বছরে এমবিবিএসের ১৫০টি আসন ভর্তিও হয়ে গিয়েছে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
তবে তাতে স্বস্তি পাচ্ছেন না অভিভাবকরা। শনিবার অভিভাবকদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা একটি স্মারকলিপিও জমা দিয়েছেন। প্রথম বর্ষের এমবিবিএস ছাত্রীর বাবা রাজেশ শর্মা বলেন, ‘কোনও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ মাঝপথে ভর্তি নেবে না। মেয়ে যদি এখন প্রতিষ্ঠান ছাড়ে, তাহলে এক বছর নষ্ট হবে। আর জাতীয় মেডিকেল কমিশন অনুমোদন বাতিল করলে সবই শেষ হয়ে যাবে।’ রাজেশের দাবি, আল-ফালাহের সকলেই জঙ্গি নয়। তাই কয়েকজনের অপরাধের জন্য যেন সকলকে শাস্তি না দেওয়া হয়। পড়ুয়াদেরও এখন একটাই প্রার্থনা, মেডিকেল কমিশন যেন অনুমোদন বাতিল না করে।