নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ফের শিক্ষায় গৈরিকীকরণের অভিযোগ। এবারও কাঠগড়ায় উঠেছে কেন্দ্রের মোদি সরকার। যদিও এই ঘটনা নতুন নয়। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই একাধিকবার শিক্ষায় গেরুয়াকরণের চেষ্টা করেছে বিজেপি সরকার। পরিবর্তন হয়েছে বিশেষত স্কুল শিক্ষা পাঠ্যে। জানা যাচ্ছে, টিপু সুলতান এবং মোগল সম্রাট আকবরকে আর ‘দ্য গ্রেট’ বলতে চাইছে না মোদি সরকার। আর সেইমতোই স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসের ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে এই সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সংশোধনের পথে হাঁটছে এনসিইআরটি (ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং)। ইতিমধ্যেই এই ইশ্যুতে তুমুল রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। সংঘ পরিবার রীতিমতো ‘আজব’ যুক্তি সাজিয়ে দাবি করেছে, আকবর কিংবা টিপু সুলতানের প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তাঁরা যেসব কুকর্ম করেছেন, পড়ুয়াদের তা জানা জরুরি। অর্থাৎ, এবার কি তবে স্কুল পাঠ্যের ইতিহাস বই সম্পূর্ণ নতুনভাবে লেখার উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার? এই প্রশ্ন তুলছে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ মহল।
মোদি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, শিক্ষামন্ত্রক কিংবা সিবিএসই কিংবা এনসিইআরটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংক্রান্ত ঘোষণা করা হয়নি। ‘টিপু সুলতান দ্য গ্রেট’, ‘আকবর দ্য গ্রেট’ থেকে ‘দ্য গ্রেট’ শব্দবন্ধ যে বাদ দেওয়া হচ্ছে, তা জানিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) অখিল ভারতীয় প্রচার প্রমুখ সুনীল আম্বেকর। একটি অনুষ্ঠানে তিনি এহেন দাবি করেছেন। এতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সমালোচনার সুর আরও তীব্র করেছেন বিরোধীরা। তাদের অভিযোগ, শিক্ষা ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি সিদ্ধান্তে যে সংঘ সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ।
জানা যাচ্ছে, সিবিএসইর একাদশ শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে ইতিমধ্যেই এহেন সংশোধনের কাজ শুরু হয়েছে। নবম, দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যবইয়ে আগামী শিক্ষাবর্ষে তা সংশোধিত হয়ে যাবে। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক অতীতে এনসিইআরটির ক্লাস এইটের পাঠ্যসূচি থেকে টিপু সুলতান, হায়দার আলি এবং ১৭০০ সালের অ্যাংলো-মাইসোর যুদ্ধের প্রসঙ্গ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই অভিযোগে বিদ্ধ হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রক। এই ব্যাপারে কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ বলেন, এরা দু’য়েকদিনের জন্য রাজত্ব করেননি। শুধুমাত্র তাঁদের নাম বাদ দিলেই কি ইতিহাস পালটে ফেলা সম্ভব? এটি আসলে শিক্ষায় সরাসরি গেরুয়া শিবিরের হস্তক্ষেপের চেষ্টা। প্রতিবাদ জারি থাকবে।