• পর্যটক সেজে দামি গাড়িতে মাদক পাচারের চেষ্টা, হেরোইন সহ ধৃত ৩
    বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: পর্যটক সেজে দামি চারচাকা গাড়িতে মাদক পাচারের চেষ্টা ভেস্তে দিল পুলিশ। হেরোইন সহ তারাপীঠ থানার পুলিশের জালে ধরা পড়ল ভিনজেলার তিন মাদক কারবারি। উদ্ধার হয়েছে ৩৫০ গ্রাম হেরোইন। এছাড়া একটি দামি চারচাকা গাড়ি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শনিবার ধৃতদের রামপুরহাট আদালতে তুলে সাতদিন নিজেদের হেপাজতে চেয়ে আবেদন জানায় পুলিশ। সরকারি আইনজীবী মনিরুল ইসলাম বলেন, এই আদালতে এনডিপিএসের মামলা হয় না। সেই জন্য বিচারক দু’দিন পুলিশ হেপাজত মঞ্জুর করেন। দু’দিন পরে ধৃতদের সিউড়ির এনডিপিএস কোর্টে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে খবর আসে মুর্শিদাবাদের দিক থেকে একটি চারচাকা গাড়িতে হেরোইন তারাপীঠে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেই মতো তারাপীঠের মুর্শিদাবাদ সীমানা ব্রাহ্মণডিহি গ্রামের কাছে নাকা চেকিং শুরু করে পুলিশ। নির্দিষ্ট খবর থাকায় গাড়িটি সীমানায় আসতেই পুলিশ আটক করে। প্রথমে গাড়ির ভিতরে থাকা যুবকরা নিজেদের পর্যটক বলে পরিচয় দেয়। পরে গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একটি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় ৩৫০ গ্রাম হেরোইন। পুলিশ গাড়িতে থাকা এরশাদ শেখ, জাহিদুল শেখ ও ওহায়িদ রাজা শেখ নামে তিনজনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত তিনজনের বাড়ি নদীয়ার কালিগঞ্জ থাকার বাগানবাড়ি এলাকায়। পুলিশের দাবি, ধৃতরা আন্তঃজেলা মাদক পাচারকারী চক্রের সদস্য। ধৃতদের জেরা করে বাকি সদস্যদের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করা হবে।

    উল্লেখ্য, তারাপীঠের হোটেল কখনও খুন করে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কখনও সঙ্গীদের সঙ্গে বেড়াতে এসে রহস্যজনকভাবে ব্যালকনি থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে পর্যটকের। আবার কখনও অন্য কোথাও খুনে অভিযুক্তরা ধরা পড়েছে তারাপীঠে হোটেল থেকে। কার্যত অপরাধীদের ‘স্বর্গরাজ্য’ এই তীর্থভূমি। এবার তালিকায় যুক্ত হয়েছে ড্রাগস। নিত্যদিন এলাকায় ঢুকছে হেরোইন সহ হরেক রকম নিষিদ্ধ মাদক। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, গত দু’-তিন বছর ধরে এই কারবারের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। এর আগে এতটা ছিল না। তবে, মদ ও গাঁজার রমরমা ছিলই। এখন যুক্ত হয়েছে হেরোইনের মতো মাদক দ্রব্য। তারাপীঠ থেকে লাগোয়া রামপুরহাট, নলহাটি, ময়ূরেশ্বর সহ বিভিন্ন জায়গায় তা বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরো কারবারে পরিচতি মুখ হয়ে উঠেছে দুই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। এলাকায় তারা ‘খোঁড়া’ নামে পরিচিত। 

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, কিছুটা নিরিবিলি মুণ্ডমালিনী তলায় এই নেশার কারবারের রমরমা বেশি। এছাড়া সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হেরোইনের রমরমা ব্যবসা চলছে। আর এই সমস্ত সিন্ডিকেটের আড়ালে রয়েছে বড় বড় রাঘববোয়াল। যারা বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাসনকে ম্যানেজ করতে সহায়তা করে। দু’চার জন ছোট ব্যবসায়ী ধরা পড়লেও বড় ব্যবসায়ীরা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। আবার তারাও কিছুদিন জেল 

    খেটে বের হয়ে ফের এই কারবারে নামছে। হাতের কাছে নেশার সামগ্রী মেলায় যুব সমাজ মাদকাসক্ত হয়ে 

    পড়ছে। তারাও নেশার জন্য টাকা জোগাড়ে অপরাধ জগতে নাম লেখাচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)