হার্ডকপির সঙ্গে বিএলও অ্যাপের তথ্য মিলছে না ভোটারের, কমিশনের ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল
বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: মুরারই বিধানসভার ভোটার তালিকায় এসআইআরের কাজে মহা ফাঁপরে পড়েছেন বিএলওরা। ২০০২সালের হার্ডকপির সঙ্গে বিএলও অ্যাপের তথ্য ম্যাচ করছে না। দুশ্চিন্তায় ভুগছেন ভোটাররা। তৃণমূলের অভিযোগ, এটা নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তৃণমূলের শক্তঘাঁটি ভাঙার চেষ্টা করছে।
ইনিউমারেশন ফর্ম বিলি সম্পন্ন হয়েছে। ৫০শতাংশ ফর্ম ফিলআপ হয়ে বিএলওদের হাতেও চলে এসেছে। কিন্তু, সেই ফর্মের তথ্য আপলোড করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন বুথ লেভেল অফিসাররা। কারও নাম ২০০২সালের হার্ডকপিতে থাকলেও বিএলও অ্যাপে মিলছে না। কারও আবার নাম মিললেও অভিভাবকের নাম আলাদা। আবার একই পরিবারের অন্য সদস্যের তথ্যের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসছে নতুন নাম। আবার এপিক নম্বর মিললেও নাম মিলছে না। কমিশনের অফিসিয়াল বিএলও অ্যাপেই এই সমস্যা হচ্ছে।
মুরারই বিধানসভার রাজগ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬নম্বর বুথের বিএলও সাবিরুল ইসলাম খান বলেন, ১০৭৭টি ইনিউমারেশন ফর্মের মধ্যে ৫০শতাংশ সংগ্রহ হয়েছে। সেগুলি যখন অ্যাপে আপলোড করতে যাচ্ছি তখন ম্যাচ করছে না। অথচ ২০০২ ও ২০২৫ সালের হার্ডকপি ভোটার তালিকায় ঠিক আছে। অধিকাংশ ভোটারের তথ্য ম্যাচ করছে না। বিশেষ করে এপিক নম্বর মিললেও নাম মিলছে না। কারও আবার অ্যাপে বাবার নাম অন্য দেখাচ্ছে। ফলে আপলোড করতে গেলেই ‘নো রেকর্ড ফাউন্ড’ লেখা দেখাচ্ছে। অন্যান্য বিধানসভার বিএলওদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হচ্ছে না। অথচ মুরারই বিধানসভার ১০০টি ফর্মের মধ্যে ৮০শতাংশের ক্ষেত্রেই এই সমস্যা দেখা হচ্ছে। এটা প্রযুক্তিগত ত্রুটি কিনা জানি না। এদিকে এমাসের মধ্যেই সমস্ত ফর্ম আপলোড করতে হবে বলে চাপ দিচ্ছে। প্রচণ্ড মানসিক যন্ত্রণার শিকার হচ্ছি। ভোটাররাও আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।
বিএলওদের অভিযোগ, লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বেশকিছু মহিলা যাঁরা এখানে বিয়ে হয়ে এসেছেন, তাঁদের সেখানকার ২০০৩ সালের ভোটার তালিকায় বাবা মায়ের যা নাম আছে, সেটা বিএলও অ্যাপে অন্য নাম দেখাচ্ছে।
এই অঞ্চলের ১৭ নম্বর বুথের বিএলও সুফিকা বেগম বলেন, এই বুথে ৮১৩জন ভোটারের মধ্যে দু’জনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাকি ৮১১জনের ফিলআপ করা ফর্ম হাতে পেয়েছি। কিন্তু সেই তথ্য যখন ডিজিটালি আপলোড করতে যাচ্ছি, তখন নো রেকর্ড ফাউন্ড দেখাচ্ছে। বেশিরভাগ ভোটারের অভিভাবকের নাম ম্যাচ করছে না। অথচ ২০০২সালের ভোটার তালিকায় তাঁদের ও অভিভাবকদের নাম রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ তোলা নিয়ে খুব সমস্যায় পড়ছি। বিএলওরা মিলে সমস্যার কথা মুরারই-১ বিডিওকে জানিয়েছি। সেইসঙ্গে আপলোড করার জন্য আরও কিছুদিন সময় দিক কমিশন।
তৃণমূলের মুরারই-১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ বলেন, অধিকাংশ বুথে এই সমস্যা হয়েছে। আমার সঙ্গেই এই ঘটনা ঘটেছে। আমার এপিক নম্বর নিয়ে সার্চ করলে অন্যজনের নাম দেখাচ্ছে। ফলে এখনও আপলোড হয়নি। বিডিওকে বিষয়টি জানিয়েছি। এটা নির্বাচন কমিশনের ষড়যন্ত্র। মুরারইয়ে আমাদের শক্তঘাঁটি ভাঙতে চাইছে। মুরারই-১ বিডিও বীরেন্দর অধিকারী সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, এতদিন ইসিআই ২৯৪টি বিধানসভার ডেটা আপলোড না করায় এই সমস্যা হয়েছে। তবে এদিনই সেই ডেটা আপলোড হয়ে যাবে। তখন আর এই সমস্যা হবে না।