• অর্থ কমিশনের ১০২১ কোটি পেল বাংলা, অভিযোগ তুলেও অনিয়ম প্রমাণে ব্যর্থ কেন্দ্র
    বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: হাতে আর মাত্র কয়েক মাস। ২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে চালু হয়ে যাবে ষষ্ঠদশ অর্থ কমিশন। এই পরিস্থিতিতে চলতি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের আটকে থাকা ১০২১ কোটি টাকা বাংলাকে ছাড়তে বাধ্য হল কেন্দ্র। প্রশাসনিক মহল মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাপেই কেন্দ্রের মোদি সরকার অবশেষে এই টাকা রাজ্যকে দিতে বাধ্য হল। একাধিক কারণ দেখিয়ে রাজ্যের এই ন্যায্য প্রাপ্য আটকে রাখা হয়েছিল। ফলে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার মতোই অর্থ কমিশনের প্রাপ্যও কেন্দ্র আটকে দেবে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু লড়াই ছাড়েনি রাজ্য। কেন্দ্রের পাঠানো চিঠির জবাবে দিল্লি উড়ে গিয়ে সমস্ত নথি তুলে দিয়ে এসেছিল রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের প্রতিনিধি দল। সেই সঙ্গে রাজ্যের তরফে চাপ বজায় রাখা হয়েছিল। তারপরই বাংলার ন্যায্য প্রাপ্য কেন্দ্র মিটিয়ে দিতে বাধ্য হল বলেই মত নবান্নের। 

    একটি অর্থবর্ষের টাকা রাজ্যকে দুই কিস্তিতে দেয় কেন্দ্র। জুলাই মাসে প্রথম কিস্তির টাকা দাবি করাতেই রাজ্যকে পাল্টা একটি চিঠি পাঠায় তারা। তাতে রাজ্য ষষ্ঠ অর্থ কমিশনের রিপোর্ট বিধানসভায় জমা না পড়া এবং আরও কয়েকটি ইস্যু তুলে বাংলার এই খাতের প্রাপ্য আটকে দেওয়ারও ‘হুমকি’ দেয় মোদি সরকার। তবে এই সংক্রান্ত ‘কমপ্লায়েন্স রিপোর্ট’ সহ অন্যান্য নথি দ্রুত কেন্দ্রের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তারপর বেশ কয়েক মাস অতিক্রান্ত হলে মোট অঙ্কের সামান্য একটি অংশ ছাড়ে কেন্দ্র। রাজ্যকে দেওয়া হয় নিঃশর্ত তহবিলের ৬৮০ কোটি টাকা। কিন্তু আটকে রাখা হয়েছিল মূল শর্তাধীন তহবিলের ১০২১ কোটি। এই টাকায় গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ এবং নিকাশি ব্যাবস্থা উন্নয়নের মতো গুরুত্বপূর্ণ নানা প্রকল্প গ্রহণ করে রাজ্য। সূত্রের খবর, কয়েক সপ্তাহ আগেও রাজ্য প্রশাসনের তরফে টাকা দ্রুত ছাড়ার জন্য আবেদন জানানো হয় কেন্দ্রকে। শেষমেশ চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রের তরফে ওই টাকা ছাড়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। 

    রাজ্যের এক প্রশাসনিক কর্তা জানিয়েছেন, চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর মাত্র চার মাস বাকি। এই টাকার কাজ শেষ করে এই অর্থবর্ষের দ্বিতীয় কিস্তি তথা পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের শেষ কিস্তির টাকা দাবি করতে হবে রাজ্যকে। সেই কারণে আরও কিছুদিন আগে এই টাকা পাওয়া গেলে ভালো হত। তাই এই অবস্থায় দ্রুত কাজ শেষ করে পরবর্তী কিস্তির টাকা দাবি করাই রাজ্যের প্রধান লক্ষ্য। 
  • Link to this news (বর্তমান)