• নাম বাতিলে ক্ষমতা খারিজ বিএলওদের, বিতর্ক এড়াতে পিছু হটল কমিশন?
    বর্তমান | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • শুভঙ্কর বসু, কলকাতা: খসড়া তালিকা থেকে আর ‘সন্দেহজনক’ ভোটারের নাম বাদ দিতে পারবেন না বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও)। তাঁদের সেই ক্ষমতা দিয়েও প্রত্যাহার করে নিল নির্বাচন কমিশন। গত মঙ্গলবার রাতে বিএলও অ্যাপে বিশেষ বদল আনা হয়। এটির মাধ্যমেই ইনিউমারেশন ফর্ম আপলোড বা ডিজিটাইজেশনের কাজ করছেন বিএলওরা। সেদিন রাতে অ্যাপে একটি নতুন অপশন যুক্ত করা হয়েছিল, যার মাধ্যমে ভোটারদের পূরণ করা ইনিউমারেশন ফর্ম পুনরায় যাচাই করতে পারছিলেন বিএলওরা। এমনকি চাইলে ‘সন্দেহজনক’ কোনও ভোটারের নাম ‘আনম্যাপ’ অর্থাৎ শেষ এসআইআরের বছরে তালিকায় থাকা ভোটারের নাম বাদ দেওয়াও যাচ্ছিল। কিন্তু শুক্রবার রাত থেকে সেই অপশন তুলে নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এখন চাইলেই আর পূরণ করা ইনিউমারেশন ফর্ম পুনরায় যাচাই এবং ভোটারদের ‘অ্যানম্যাপ’ করতে পারবেন না বিএলওরা। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস সহ দেশের তামাম বিরোধী দল। তাদের সম্মিলিত চাপেই কি শেষপর্যন্ত নতি স্বীকারে বাধ্য হল কমিশন? সেই প্রশ্ন উঠছে। 

    শুধু ইনিউমারেশন ফর্ম পুনরায় যাচাই ও ভোটার ‘আনম্যাপ’ই নয়, অ্যাপ থেকে আরও দু’টি অপশন তুলে নিয়েছে কমিশন। আগে মোট পাঁচটি অপশন দেওয়া হয়েছিল। ফর্ম যাচাই-আনম্যাপের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকায় কত ইনিউমারেশন ফর্ম বিতরণ হয়েছে এবং কোন ভোটার অনলাইনে ফর্ম পূরণ করছেন, সেটাও জানতে পারতেন বিএলওরা। সেই দু’টি অপশন এখন আর অ্যাপে নেই। ফলে বিএলওরা অ্যাপে মাত্র দু’টি অপশন পাচ্ছেন। তার মাধ্যমে শুধুমাত্র পূরণ করা ইনিউমা঩রেশন ফর্ম এবং যে সব ভোটারের এপিক কার্ডের তথ্য মিলে গিয়েছে, সেগুলি আপলোড করা যাচ্ছে। আর অপশন রাখাই হয়নি। 

    এসব অপশন তুলে নেওয়ার পর সরব হয়েছেন বিএলওরা। উত্তরে কমিশনের তরফে তাঁদের এসএমএস করে জানানো হচ্ছে, ‘এটা প্রযুক্তিগত সমস্যা। আমরা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। দয়া করে ধৈর্য ধরুন।’ কমিশনের তরফে বিষয়টি প্রযুক্তিগত সমস্যা বলে দাবি করা হলেও বিএলওদের ভোটার ‘অ্যানম্যাপ’ করার ক্ষমতা দেওয়ার পরই রাজনৈতিক বিতর্ক দানা বেধেছিল। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন ছিল, ‘সন্দেহজনক’ ভোটারদের বাদ দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা বিএলওদের দেওয়া কি ঠিক? বিএলও অ্যাপের এই অপশনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হবে না তো? অর্থাৎ যোগ্য ভোটারদের ‘আনম্যাপ’ করে দেওয়া হবে না তো? এখন কমিশন এখন প্রযুক্তিগত সমস্যার কথা বলে সেই অপশন তুলে নেওয়ায় প্রশ্ন উঠছে, রাজনৈতিক বিতর্ক এড়াতেই কি এই সিদ্ধান্ত? কারণ, বিহার পর্বে এসআইআর নিয়ে শীর্ষ আদালতের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল কমিশনকে। এই পর্বে যাতে তাদের সেরকম কিছুর সম্মুখীন হতে না হয়, সেজন্যই বিএলওদের ক্ষমতা দিয়েও তা খারিজ করা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)