• একই ভোটারের নাম ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে, তালিকায় বড়সড় গরমিলের অভিযোগ, ধোঁয়াশায় কমিশন
    এই সময় | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • ভোটার তালিকায় গরমিল নিয়ে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন মহলে। সেই কারণেই SIR অর্থাৎ তালিকার নিবিড় সংশোধন করা হচ্ছে বলে দাবি করছে নির্বাচন কমিশন। বিহার থেকে কর্নাটক, কখনও ‘ডগেশ বাবু’ নামে আবেদন পূরণের অভিযোগ, কখনও কর্নাটকের ভোটার তালিকায় দেখা গিয়েছে ব্রাজিলের মডেলের নামও। এই ধরনের অভিযোগের তালিকায় পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গও। সে রকমই এক উদাহরণ মিলল পশ্চিম বর্ধমানে। ভোটারের নাম ও ছবি এক। পদবী আলাদা। নাম রয়েছে রাজ্যের মোট ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে। বিষয়টি ধরা পড়ার পরে ধোঁয়াশায় কমিশনও।

    পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের বৈদ্যনাথপুর গ্রামের ডিভিসি পাড়ার বাসিন্দা মায়ারানি গোস্বামী। SIR-এর জন্য সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে গিয়েছিলেন BLO। সঙ্গে ছিল মায়ারানির এনিউমারেশন ফর্ম। প্রতিটি ভোটারের ফর্মেই একটি করে কিউআর কোড দেওয়া আছে। যেটি BLO-রা স্ক্যান করলেই BLO-রা ভোটারের সমস্ত তথ্য দেখতে পাবেন মোবাইলে। সেটা করেই চক্ষু চড়কগাছ BLO-র।

    কিউআর কোড স্ক্যান করতেই এক এক করে রাজ্যের মোট ৪৪ টি বিধানসভা কেন্দ্রে মায়ারানির নাম বেরিয়ে আসে। দার্জিলিং থেকে মুর্শিদাবাদ। মেদিনীপুর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। কোথাও মায়ারানি গোস্বামী। আবার কোথাও মায়ারানি মণ্ডল বা রায়। একাধিক পদবী ব্যবহার করা হয়েছে মায়ারানির নামের পাশে। মায়ারানির স্বামী গৌর গোস্বামী অনেকদিন আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর নামও রয়েছে এবং নামের পাশে একাদিক পদবি ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ৪৪ কেন্দ্রে নাম উঠল কী ভাবে? শুরু বিতর্ক।

    বিষয়টি নিয়ে মায়ারানি নিজে বলছেন, ‘আমি এসব কিছুই জানি না। শনিবার শুনলাম আমার নাম একাধিক জায়গায় আছে। কী ভাবে হলো জানি না।’ স্বাভাবিক ভাবেই, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বাদানুবাদও। বৈদ্যনাথপুর অঞ্চলের তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি রবীন পাল বলেন, ‘মায়ারানিকে আমরা জানি। লোকের বাড়িতে রান্নার কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালান। স্বামী অনেকদিন আগে মারা গিয়েছেন। তাঁর পক্ষে রাজ্যের ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে নাম তোলা সম্ভব নয়। কোথাও একটা ভুল হয়েছে। নির্বাচন কমিশন তদন্ত করে দেখুক।’

    ঘটনায় বিস্মিত দুর্গাপুর–বর্ধমান লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ। তাঁর কথায়, ‘ভয়ঙ্কর ঘটনা। নির্বাচন কমিশনের উচিত তদন্ত করে সমস্যার সমাধান করা। অতি দ্রুততার সঙ্গে সার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে গিয়ে এই ধরনের ভুল হচ্ছে। প্রকৃত ভোটারদের নাম কেটে অন্য লোকের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে সার বন্ধ করা দরকার।’ তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে বিজেপি। পাণ্ডবেশ্বরের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, ‘পাণ্ডবেশ্বরের এই ঘটনা বুঝিয়ে দিচ্ছে কেন সার (SIR) দরকার। এই ধরনের ভুয়ো ভোটারই তৃণমূলের চালিকা শক্তি।’ দুর্গাপুরের এইআরও (এসিস্ট্যান্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার ) রঞ্জনা রায় বলছেন, ‘এমন কোনও অভিযোগ পাইনি। নির্দিষ্ট ভাবে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে বলা যাবে ঠিক কী ঘটেছে।’

  • Link to this news (এই সময়)