• ৩৭ বছর পর মিলল বড় ছেলের সন্ধান, সৌজন্যে এসআইআর!
    আজকাল | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: এসআইআর ঘিরে উত্তপ্ত বাংলার রাজনীতি। এসআইআর প্রক্রিয়ার চাপে অতিষ্ট বহু বিএলও। অভিযোগ কাজের অতি চাপে মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মীর। এসবের মধ্যেই এসআইআর ফিরিয়ে দিল বাড়ির বড় ছেলেকে। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের গোবরান্দা গ্রামে এ যেন অবাক কাণ্ড। ৩৭ বছর পর পরিবার খুঁজে পেলেন বিবেক চক্রবর্তী।

    ঘটনা ঠিক কী?পুরিলায়ার চক্রবর্তী পরিবারের ছোট ছেলে প্রদীপ চক্রবর্তী নিজের গ্রাম গোবরান্দার বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)। স্বাভাবিকভাবে এনুমারেশন ফর্মে প্রদীপের নাম ও মোবাইল নম্বর ছিল। প্রদীপের বড় দাদা বিবেক চক্রবর্তীর ছেলে কলকাতা থেকে যোগাযোগ করেন সম্পর্কে কাকা প্রদীপের সঙ্গে। তবে ফোন করার আগে পর্যন্ত তিনি জানতেনই না যে বিএলও তাঁর নিজের ছোট কাকা। 

    বিএলও প্রদীপ চক্রবর্তীর কাছে ২০০২ সালের তথ্য জানতে চায় বিবেকের পরিবার। সেই সময়ই ঘটে অবাক কাণ্ড! নথি ঘেঁটে প্রদীপ বুঝতে পারেন যে, বিবেকই তাঁর দাদা! তখন দীর্ঘ অন্ধকার, মন খারপ দুরে ঠেলে আনন্দের রেশ পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুর ২ নম্বর ব্লকের গোবরান্দা গ্রামের চক্রবর্তী পরিবারে।

    এরপরই জানাজানি হয় চক্রবর্তী পরিবারের বড় ছেলের হৃদয়বিদারক বিচ্ছেদের ঘটনা। বিবেক চক্রবর্তী শেষবার ১৯৮৮ সালে বাড়িতে এসেছিলেন। তারপর বাড়ি ছাড়া হয়ে যান। কোনও যোগাযোগ ছিল না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেওমেলেনি কোনও সন্ধান। পারিবারিক মতবিরোধের জেরে অভিমান বুকে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছিলেন বিবেক। 

    বিএলও তথা চক্রবর্তী বাড়ির ছোট ছেলে প্রদীপের কথায়, " যখন দাদার ছেলে আমাকে ফোন করেছিল এবং তাঁর প্রশ্নের উত্তরগুলি কেবল আমাদের পরিবারই জানত তা দেখেই আমার সব সন্দেহ দূর হয়। আমি বুঝতে পারি যে আমি আমার নিজের ভাইপোর সঙ্গে কথা বলছি।" পরে দাদা বিবেক চক্রবর্তচীর সঙ্গে প্রদীপের কথা হয় ফোনে। তখন উভয় প্রান্তেই আবেগের বন্যা। এক নিমেষে গায়েব বুক চাপা অভিমান। 

    প্রদীপ চক্রবর্তী বলেছেন, "যাঁরা আমাকে বিএলও হিসেবে নিযুক্ত করেছেন, তাঁদের এবং নির্বাচন কমিশনকেও ধন্যবাদ জানাতে হবে, কারণ এই সরকারি প্রক্রিয়ার কারণেই আমরা আজ আমাদের হারিয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যকে ফিরে পেয়েছি। আমার বিএলও কাজের কারণে প্রতিটি ফর্মে আমার নাম এবং নম্বর ছিল। সেই কারণেই বিবেক চক্রবর্তীর ছেলে আমাকে তথ্যের জন্য ফোন করেছিল, এবং তখনই সে বুঝতে পারে যে সে তাঁর কাকার সাথে কথা বলছে, এবং আমি বুঝতে পারি যে আমি আমার নিজের ভাইপোর সঙ্গে কথা বলছি।"

    অন্যদিকে বিবেক চক্রবর্তী পরিবারের সঙ্গে এক হতে পেরে আবেগপ্রবণ। তিনি বলেন, "এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। দীর্ঘ ৩৭ বছর পর, অবশেষে আমি বাড়ি ফিরছি। আমি সবার সঙ্গে কথা বলেছি। আমার খুব আনন্দ হচ্ছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানাই কারণ এসআইআর প্রক্রিয়া ছাড়া এই পুনর্মিলন কখনও সম্ভব হত না।"

     
  • Link to this news (আজকাল)