স্কুলে পথকুকুর নিয়ে নজরদারির ভার শিক্ষকদের! ছত্তিশগড়ে নয়া নির্দেশ ঘিরে চরম ক্ষোভ
প্রতিদিন | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছত্তিশগড় সরকার রাজ্যের স্কুলগুলিতে পথকুকুরের আনাগোনা রোধে নতুন নির্দেশ জারি করতেই ক্ষোভে ফুঁসছে শিক্ষকদের একাংশ। শিক্ষা দপ্তরের অধীনস্থ ডিরেক্টরেট অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন (ডিপিআই) সব স্কুলপ্রধান, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশ দিয়েছে, স্কুলপ্রাঙ্গণে যদি পথকুকুর ঘোরাঘুরি করে, তা যেন অবিলম্বে রিপোর্ট করা হয় এবং ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
ডিপিআইয়ের এই সার্কুলারে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের এক রিট মামলায় দেওয়া নির্দেশের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, প্রতিটি স্কুলে একজন নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে, যিনি সাধারণত স্কুল প্রধান পদে রয়েছেন। তাঁর দায়িত্ব হবে স্কুল ও আশপাশের পরিবেশকে নিরাপদ রাখতে প্রয়োজনীয় নজরদারি ও সেইমতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো। এই নির্দেশকে ‘অবাস্তব’ ও ‘অতিরিক্ত বোঝা’ বলে তীব্র সমালোচনা করেছে শিক্ষক সংঘ (স্কুল টিচার্স ইউনিয়ন)। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বীরেন্দ্র দুবে বলেন, “শিক্ষকদের উপর এমনিতেই নানাবিধ দায়িত্ব থাকে। তার উপরে আবার পথকুকুর নিয়ে নজরদারি, এমন দায়িত্ব চাপানো বাস্তবসম্মত নয়। এতে শিক্ষকরা তাঁদের মূল শিক্ষাদান থেকে সরে যেতে বাধ্য হবেন। প্রশাসনিক দায়িত্ব স্থানীয় প্রশাসন-পঞ্চায়েত বা পুর সংস্থাকেই দেওয়া উচিত।”
অনেক স্কুল শিক্ষকও অভিযোগ করছেন, এই নির্দেশ তাঁদের শিক্ষাদানের কাজে ব্যাঘাত ঘটাবে। এক শিক্ষকের কথায়, “প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষকরা তো নির্দিষ্ট সময়েই স্কুলে থাকেন। সারাদিন কীভাবে নজর রাখবেন স্কুলে পথকুকুর ঢুকল কি না? আর কোনটাকে পথকুকুর বলে চিহ্নিত করব, সেটাই বা কীভাবে নির্ধারণ করবেন?” বিতর্ক বাড়তে থাকায় রাজ্যের স্কুল শিক্ষামন্ত্রী গজেন্দ্র যাদব স্পষ্ট করেছেন, নির্দেশ জারির উদ্দেশ্য শিক্ষক বা স্কুলকে বাড়তি ঝামেলায় ফেলা নয়, বরং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করা, যাতে ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। তাঁর বক্তব্য, “সরকারের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের মর্ম অনুযায়ী। কাউকে আঘাত করার জন্য নয়। এই নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা না করাই ভালো।”