• মাতৃদুগ্ধে ইউরেনিয়াম, জন্মের পরেই ‘বিষ’ খাচ্ছে বিহারের সদ্যোজাতরা, সমীক্ষায় উদ্বেগ
    এই সময় | ২৩ নভেম্বর ২০২৫
  • জন্মের পরে শিশুর প্রথম আহার হলো মাতৃদুগ্ধ। শুধু প্রথম নয়, চিকিৎসকরা বলেন, ৬ মাস পর্যন্ত এটাই তাদের একমাত্র খাবার। আর সেই মাতৃদুগ্ধেই কি না বিষাক্ত ইউরেনিয়াম! বিহারের ৬টি জেলায় সমীক্ষা চালিয়ে এমনই উদ্বেগজনক তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা। ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।

    তবে আশঙ্কার কিছু নেই বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল ডিজাস্টার অথরিটি ম্যানেজমেন্টের সদস্য এবং বিজ্ঞানী দীনেশ কে অসওয়াল। তাঁর কথায়, ‘নমুনায় যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম মিলেছে, তা হু-র বিপদসীমার অনেক নীচে।’ কিন্তু তার পরেও বিতর্ক থামছে না। বিহারের আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

    বিহারের মহাবীর ক্যানসার সংস্থান অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার, লাভলি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটি এবং দিল্লি এইমসের বিজ্ঞানীরা যৌথ ভাবে ভোজপুর, সমস্তিপুর, বেগুসরাই, খাগারিয়া, কাটিহার এবং নালন্দা জেলায় সমীক্ষা চালান। ১৭ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মোট ৪০ জন মহিলার স্তন্যদুগ্ধের নমুনা পরীক্ষা করেন তাঁরা। তার সব ক’টি নমুনাতেই বিষাক্ত ইউরেনিয়াম-২৩৮ মিশে থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি। এর মধ্যে কাটিহারের নমুনা মাতৃদুগ্ধে ইউরেনিয়াম থাকার প্রমাণ সর্বাধিক। এই সমীক্ষা সামনে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

    বিশেষজ্ঞদের দাবি, সমীক্ষার ফল অনুযায়ী যে সমস্ত সদ্যোজাত এই মাতৃদুগ্ধ পান করেছে, তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশেরই আগামী দিনে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি রয়েছে। তবে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা নেই বলেই দাবি তাঁদের।

    গবেষকদের দাবি, বিহারের ভূগর্ভস্থ জলে চড়া মাত্রায় ইউরেনিয়াম রয়েছে। এই জলই পান করেন বিহারবাসী। চাষের কাজেও ব্যবহার হয়। সেখান থেকেই মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলেও ঢুকে পড়ছে ইউরেনিয়াম। ধীরে ধীরে তা বাসা বাঁধছে শিশুর শরীরেও।

    হু-র মতে, পানীয় জলে ইউরেনিয়ামের নিরাপদ সীমা হলো 30 ppb। ন্যাশনাল ডিজাস্টার অথরিটি ম্যানেজমেন্টের সদস্য এবং বিজ্ঞানী দীনেশ কে অসওয়ালের কথায়, ‘মাতৃদুগ্ধের নমুনায় যে পরিমাণ পাওয়া গিয়েছে, তা অনেক কম। তাছাড়া স্তন্যদানকারী মায়েরা যে ইউরেনিয়াম গ্রহণ করছেন, তার বেশিরভাগটাই প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। স্তনদুগ্ধে পৌছয় খুবই কম। তাই সদ্যোজাতর শরীরে খুব একটা প্রভাব পড়বে না।’

    উল্লেখ্য, দেশের ১৮টি রাজ্যের ১৫১টি জেলার ভূগর্ভস্থ জলে ইউরেনিয়াম থাকার প্রমাণ নিলেছে। এই নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। তবে দীনেশ অসওয়ালের স্পষ্ট কথা, ‘ভুল বোঝাবুঝির কারণে মায়েরা যদি দুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন, তা হলে বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

  • Link to this news (এই সময়)