সাংগঠনিক কমিটি ভাঙার পর ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়’, ভোটে হেরে নতুন দাবি পিকের
প্রতিদিন | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: ২৪৩ আসনের মধ্যে ২৩৮টি আসনে লড়ে একটিতেও জয় নেই। অভিযোগ করলেন, বিহারের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে মনে করেন। যদিও তাঁর হাতে কোনও প্রমাণ নেই। তবে ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়’ বলেও জানান জন সুরাজ পার্টির সুপ্রিমো প্রশান্ত কিশোর। অন্যদিক, নির্বাচনে ভালো ফল করার আশা করেছিল প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজ পার্টি। কিন্তু একটা আসনেও জিততে পারেনি তারা। ভরাডুবির জন্য দায় নিজের কাঁধেই নিয়েছেন পিকে। এর পরেই দলের রাজ্যস্তর থেকে পঞ্চায়েত পর্যন্ত সব স্থরের সাংগাঠনিক কমিটি ভেঙে দিলেন পিকে। তবে রাজনীতি থেকে সরে আসছে না জন সুরাজ পার্টি। বিহারের মানুষের স্বার্থে তাঁরা কাজ করবেন এবং লড়াই চালিয়ে যাবেন। সেই সঙ্গে খুব দ্রুত নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জন সুরাজের তরফে জানান হয়েছে।
এদিন পিকে দাবি করেন, জন সুরাজ যাত্রার সময় জনগণের প্রতিক্রিয়া, প্রচারের শক্তি, ময়দানে থাকা, কিছুই ভোট-ফলাফলের সঙ্গে মেলেনি। তাঁর কথায়, “অপরাজেয় কিছু শক্তি কাজ করেছে। যেসব দলকে লোক চিনত না, তারা লক্ষ লক্ষ ভোট পেল!” ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলতে অনেকে চাপ দিলেও পিকে বলেন, “হারলে লোকেরা এসব বলে। প্রমাণ নেই। কিন্তু অনেক হিসেব মিলছে না। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, কিছু একটা বেইমানি হয়েছে।” তিনি মনে করেন, ভোটের আগে হাজার হাজার মহিলাকে ‘টাকা বিলি’ করেছে এনডিএ শিবির। তাঁর কথায়, “ভোট ঘোষণার দিন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত মেয়েদের ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, এনডিএকে ভোট দিলে দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাবেন। এটা ছিল প্রথম কিস্তি!” তাঁর দাবি, “দেশে কোনও সরকারকে আমি এমনভাবে ৫০ হাজার মহিলার হাতে নগদ বিলি করতে দেখিনি।” ভোটে ভরাডুবির নিয়ে প্রশান্তের ব্যাখ্যা, “শেষ দফার দিকে অনেকেই ভেবেছেন আমরা জিতব না। তাঁরা ভয় পেয়েছেন। আমাদের ভোট দিলে নাকি লালুর রাজ ফিরে আসতে পারে। সেই ভয়েই অনেক ভোট সরে গিয়েছে।” সমালোচকদের বিঁধে পিকে বলেন, “যারা আজ আমার শেষ দেখছেন, তারাই অতীতে হাততালি দিয়েছে। আমি যদি সফল হই, আবার হাততালি দেবে। যারা সমালোচনা করছে, তারাই আমার বিষয়ে সবচেয়ে কৌতূহলী। তার মানে আমি এখনই শেষ হয়ে যাইনি, ‘অভি কাহানি বাকি হ্যায়’।”
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে জেএসপি-র রাজ্য সভাপতি মনোজ ভারতীর নেতৃত্বে পাটনায় দলের জাতীয় কাউন্সিলের বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন পিকেও। সেখানেই দলের সমস্ত সাংগঠনিক কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জন সুরাজ পার্টির মুখপাত্র সৈয়দ মসিহ উদ্দিন একটি বিবৃতি দিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। কী কারণে দলের পঞ্চায়েত থেকে রাজ্য স্তরের সমস্ত কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে তাও জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গেই জানানো হয়েছে, আগামী দেড় মাসের মধ্যে দলের নতুন কমিটি গঠন করবে জন সুরাজ পার্টি। পঞ্চায়েত স্তর থেকে রাজ্য স্তরে নতুন করে সক্রিয় এবং কার্যকর কমিটি গঠন করা হবে।
এই কাজের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের ১২ জন প্রবীণ নেতাকে। সেই সঙ্গেই কেন বিহারে এই পরাজয় হয়েছে, তার কারণও খুঁজে দেখবেন ওই নেতারা। এরই সঙ্গেই কেনই বা সেখানকার মানুষ তাদের আবেদনে সাড়া দেননি তার কারণ খোঁজার কাজও দেওয়া হয়েছে ওই নেতাদের। সেই কারণগুলি চিহ্নিত করে দলের মধ্যে আলোচনা করা হবে। যদি কোনও নেতা দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ বা বিশ্বাসঘাতকতার মতো কাজ করে থাকেন, তবে তাঁদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।