• শীতকালীন অধিবেশনে পেশ হচ্ছে না চণ্ডীগড় সংবিধান সংশোধন বিল, বিরোধীদের প্রবল চাপ
    বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: শেষ পর্যন্ত বিরোধীদের চাপের কাছে মাথা নত করতে হল মোদি সরকারকে। সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরু হতে এখনও এক সপ্তাহ বাকি। তবে চণ্ডীগড় সংক্রান্ত সংবিধান সংশোধন বিল নিয়ে আগামী রবিবার সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে প্রতিবাদের ঝড় উঠবে বলেই আভাস পেয়েছে সরকার। তার আগেই বিরোধীদের সমালোচনার মুখে পড়ে বিলটির বিষয়ে ঢোঁক গিলল মোদি সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, আম আদমি পার্টির শাসনে চলা পাঞ্জাব থেকে চণ্ডীগড়ের অধিকার কেড়ে নেওয়ার তোড়জোর শুরু করেছিল কেন্দ্র। ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে চলা সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে আনা হচ্ছিল ১৩১তম সংবিধান সংশোধন বিল। যে বিলে সংবিধানের ২৪০ অনুচ্ছেদকে চণ্ডীগড়েও কার্যকর করা হবে। আন্দামান নিকোবর, লাক্ষাদ্বীপ, দাদরা ও নগর হাভেলি, দমন দিউয়ের মতোই সরাসরি দেশের রাষ্ট্রপতির হাতে নিয়মকানুন তৈরির অধিকার দেওয়া হবে।

    সরকার এবারের অধিবেশনে ১০টি নতুন বিল আনবে বলে জানিয়েছে। তারই মধ্যে একটি চণ্ডীগড় সংক্রান্ত বিল। তবে সরকারের উদ্দেশ্য জানার পরেই সরব হয়েছে আপ, কংগ্রেস, শিরোমণি অকালি দলের মতো বিরোধীরা। যা নিয়ে চাপে পড়ে সরকারও। শেষ পর্যন্ত বিতর্ক এড়াতে এই বিলটি আপাতত আনা হবে না বলেই রবিবার জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বলেছে, শীতকালীন অধিবেশনে চণ্ডীগড় সম্পর্কিত প্রস্তাবিত বিলটি আনছে না কেন্দ্র। যদিও এই বিলের উদ্দেশ্য কোনওভাবেই চণ্ডীগড়ের প্রশাসনিক কাঠামো বা শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন নয়। তবে চণ্ডীগড়ের স্বার্থ মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে যথাযথ আলোচনার পরই পরবর্তী উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এনিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনও কারণ নেই।

    বিল আনা হবে বলে তালিকাবদ্ধ করেও সরকার পিছু হটায় রবিবার সরব হয়েছে কংগ্রেস। হাত শিবিরের মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, মোদি সরকার আগে কাজ করে, পরে ভাবে। এটাই ওদের দ্রুত কাজ করার উদাহরণ। প্রথমে ঘোষণা এবং পরে চিন্তা করা। চণ্ডীগড় সংক্রান্ত বিলে পিছু হটলেও শীতকালীন অধিবেশনে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার বিল আসছে। ‘দ্য হায়ার এডুকেশন কমিশন অব ইন্ডিয়া’ নামে বিল এনে মোদি সরকার এতদিনের তিন প্রতিষ্ঠান তুলে দিতে চাইছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন (এআইসিটিই) এবং ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই) আর থাকবে না। ওই তিন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে শুধুমাত্র একটিই গড়া হবে—উচ্চশিক্ষা কমিশন।

    এর পাশাপাশি দ্য অ্যাটমিক এনার্জি বিলও আনছে মোদি সরকার। যে বিল আইনে পরিণত হলে পরমাণু ক্ষেত্রেও বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা অংশ নিতে পারবে। জাতীয় সড়ক তৈরির জন্য আরও সহজে জমি অধিগ্রহণ করতেও আসছে একটি বিল। এছাড়া বিমা ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগেরও (এফডিআই) বিল আসছে। বাতিল হবে পুরোনো ১২০টি বিলও। তবে এনিয়ে বিরোধীরা যে চুপ করে বসে থাকবে না, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। শীতকালীন অধিবেশনে কংগ্রেস ভোট চুরি ইশ্যুতে সরব হবে। তৃণমূল তুলবে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। প্রতিবাদ করা হবে এসআইআরেরও।
  • Link to this news (বর্তমান)