জেলা পরিষদের গ্রুপ ডি পদে চাকরির নামে প্রতারণার জেরে সিভিক গ্রেপ্তার
বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিষদে গ্ৰুপ ডি পদে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। নিয়োগপত্র দেখানো হলেও হাতে দেওয়া হয়নি। শনিবার রাতে আর্থিক প্রতারণা ও জাল নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগে জামবনী থানার সিভিক ভলান্টিয়ার দিব্যেন্দু পালকে গ্ৰেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতকে ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানার মানখণ্ড গ্ৰামের বাসিন্দা অমিত কলা। জামবনীর মুড়াকাটি গ্ৰামে পথশ্রী প্রকল্পে সুপার ভাইজারের কাজে গত মার্চ মাসে এসেছিলেন। অভিযুক্তের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে ছিলেন। সেইসময় দিব্যেন্দু তাঁর স্ত্রীকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদে গ্ৰুপ ডি পদে চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। জেলা পরিষদ ও পাবলিক সার্ভিস রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ পরিচয় থাকার কথা জানায়। বিশ্বাস অর্জনের জন্য বেশকিছু ব্যক্তির নিয়োগপত্র অমিতবাবুকে দেখায়। এরপর স্ত্রীর চাকরির জন্য গত ১৪ এপ্রিল দিব্যেন্দুর হাতে নগদ ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা দেন।
এরপর সপ্তাহখানেকের মধ্যেই ইন্টারভিউয়ের জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নামে একটি মেল আসে। গত ২০ এপ্রিল স্ত্রী তারিণী কলার সঙ্গে অমিতবাবুকেও কমিশনের কলকাতার অফিসে যেতে বলা হয়। দিব্যেন্দু ও অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন ব্যক্তি কলকাতার ওই অফিসে গিয়ে দেখা করে। এরপর তারিণীদেবীর নিয়োগপত্র দেখিয়ে সাবিনা বিশ্বাস নামে এক মহিলার অ্যাকাউন্টে ১৩ হাজার টাকা পাঠাতে বলা হয়। ওই টাকা অ্যাকাউন্টে পাঠালেই তারিণীদেবী জেলা পরিষদের গ্ৰুপ ডি পদে কাজে যোগ দিতে পারবেন বলে জানানো হয়।
সেইমতো অমিতবাবু আরও ১৩ টাকা ওই মহিলার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ অফিসে গিয়ে অমিতবাবু জানতে পারেন তাঁর স্ত্রীর নিয়োগপত্র জাল। নিয়োগপত্রে সরকারি আমলার সিলমোহর, বিশ্ব বাংলার লোগো ও সরকারি লেটারহেড সবই জাল করা হয়েছে। এরপর শনিবার দুপুরে জামবনী থানায় তিনি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জামবনী থানার পুলিশ ওইদিন রাতেই অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করে।
অমিতবাবু বলেন, কাজের সূত্রে মুড়াকাটি গ্ৰামে দিব্যেন্দুর বাড়িতে ভাড়া ছিলাম। স্ত্রীর চাকরি করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল। ধার দেনা করে টাকা জোগাড় করেছিলাম। স্ত্রীর নিয়োগপত্র আমার হাতে দেওয়া হয়নি। মোবাইল ফোনে ছবি তুলে নিতে বলা হয়েছিল। নিয়োগপত্র জাল জানতে পেরেই থানায় অভিযোগ করি। জামবনী থানার পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার পিছনে বড় কোনও চক্র রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।