• বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলে না, ই এম বাইপাসে ‘ডার্ক জোন’ ম্যাপিং শুরু কলকাতা পুলিশের
    বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: টেগোর পার্ক থেকে রুবি মোড় যাওয়ার রাস্তা। রাত সাড়ে আটটা। কর্মস্থল থেকে বাড়ির পথে বছর পঞ্চাশের এক মহিলা। আচমকা পিছন দিক থেকে এসে হামলা। বাইকে করে এসে দুই ব্যক্তি মহিলার গলা থেকে টান মেরে সোনার হার ছিনিয়ে নেয়। তারপর বাইক নিয়ে পালায় বিনাবাধায়। ই এম বাইপাসের পাশের এই সার্ভিস রোড তখন প্রায় অন্ধকারে ডুবে। মহিলা চিৎকার করছিলেন। কিন্তু রাস্তা ফাঁকা থাকায় কোনও সাহায্য পাননি। এরপর পুলিশে অভিযোগ করেন প্রৌঢ়া। এমন ঘটনা একটি ঘটেছে এমন কিন্তু নয়।

    দিনের পর দিন টেগোর পার্কে একাধিক ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠছে। রুবি মোড় পর্যন্ত ই এম বাইপাসের উপর একাধিক ঘটনা ঘটছে বলে বাড়ছে আতঙ্ক। রুবি থেকে কালিকাপুর যাওয়ার রাস্তাতেও এরকম বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ এসেছে পুলিশের কাছে। তদন্তে উঠে এসেছে রাস্তাটি অন্ধকারাচ্ছন্ন। কোথাও ল্যাম্প পোস্টে থাকা আলো জ্বলে না। কোথাও আবার পোস্টে আলোই নেই। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হচ্ছে ছিনতাইকারীরা। ক্রমে বাড়ছে ছিনতাই ও অন্যান্য অপরাধ।

    লাগাতার অভিযোগের পর এবার থানা ও ট্রাফিক গার্ড শুরু করেছে ‘ডার্ক জোন ম্যাপিং’। ই এম বাইপাসের উপর ও সার্ভিস রোডে কোথায় আলো নেই বা অপ্রতুল আলো তা চিহ্নিত করবে পুলিশ। রিপোর্ট যাবে কলকাতা পুরসভায়। এরপর সে জায়গাগুলিতে পর্যাপ্ত আলো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে প্রশাসনের তরফে। ছিনতাইয়ের উপদ্রব কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে।

    অন্যদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টেগোর পার্ক-রুবির মধ্যে ই এম বাইপাসের দু’টি লেনের বেশ কিছু অংশ অন্ধকারে ডুবে। বাতিস্তম্ভের আলো বারবার অকেজো হয়ে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। এই অংশে হাসপাতাল পর্যন্ত আছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে সেখানকার কর্মীরাও। তাঁদের অভিযোগ, অন্ধকারে সন্দেহজনক বাইকচালকদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। রাস্তা ফাঁকা থাকলেই ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে তারা। শেষ ছ’মাসে পাঁচ-পাঁচটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে বাইপাসের এই অংশে। পরপর অভিযোগের পর সক্রিয় হয় কসবা ও আনন্দপুর থানা। একইসঙ্গে কসবা ট্রাফিক গার্ডের তরফেও অন্ধকার অংশগুলি চিহ্নিত করা হয়। ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে খবর, শেষ যে রিপোর্ট লালবাজারে জমা পড়েছে তাতে টেগোর পার্ক-রুবি মোড়ের মাঝে ১১টি ল্যাম্পপোস্ট অকেজো। দ্রুত পোস্টগুলির খারাপ আলো মেরামত করার জন্য কলকাতা পুরসভার কাছে আর্জি পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে থানার তরফেও পৃথকভাবে পুরনো ছিনতাইয়ের ঘটনার চরিত্র ঘেঁটে ডার্ক জোন চিহ্নিতকরণের চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)