• মাত্র ৯০ সেকেন্ড অন্তর চলবে মেট্রো! দক্ষিণেশ্বর-ক্ষুদিরাম রুটে নয়া পরিকল্পনা রেলের
    বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শুনলে গল্পকথা মনে হতে পারে! কিন্তু সবকিছু পরিকল্পনা মতো চললে এটাই হতে চলেছে ঘোর বাস্তব! মেট্রো রেলের দাবি, শহিদ ক্ষুদিরাম-দক্ষিণেশ্বর রুটে মাত্র ৯০ সেকেন্ডের ব্যবধানে পরিষেবা পাবেন যাত্রীরা। 

    গত ২৮ জুলাই কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনে ফাটল ধরা পড়ে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ওই স্টেশন। তারপর থেকে শহরের ব্যস্ততম এই মেট্রো রুটে পরিষেবা কার্যত লাটে উঠেছে। আগে যেখানে ৬ থেকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে মেট্রো মিলত, বর্তমানে তা বেড়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট হয়ে দাঁড়িয়েছে। নিত্যদিন মেট্রো পেতে কালঘাম ছুটছে যাত্রীদের। তাছাড়া, বিদ্যুৎ সংযোগে ত্রুটি কিংবা সিগন্যালের বিভ্রাট লেগেই আছে। নতুন যন্ত্রণা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে মেট্রো ট্র্যাক জলে ডুবে যাওয়া। এরকম একাধিক কারণে দেশের সবচেয়ে পুরোনো এই মেট্রোপথে পরিষেবা গত কয়েকমাসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বন্ধ থেকেছে একাধিক দিন। যা নিয়ে যাত্রী মহলে ক্ষোভ চরমে উঠেছে। এই আবহে কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, পরিচালন ব্যবস্থার একাধিক ক্ষেত্রে সার্বিক পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুসংহত পরিকল্পনা করা হয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে লন্ডন কিংবা মস্কোর মতো ৯০ সেকেন্ড অন্তর পরিষেবা পাবেন কলকাতার মেট্রো যাত্রীরাও। 

    সূত্রের খবর, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনা, ট্র্যাকশন সাবস্টেশন, টানেল ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, সিগন্যালিং ব্যবস্থা, থার্ড রেল বদল, রেল ট্র্যাক ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসছে। কাজের জন্য প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে রেলমন্ত্রক। যদিও এই কাজ কবে শেষ হবে, তা জানা নেই মেট্রো ভবনের শীর্ষকর্তাদের। এই মেট্রো লাইনের যেসব স্টেশনে ট্র্যাকশন সাবস্টেশন হবে, সেগুলি হল কালীঘাট, নেতাজি ভবন, ময়দান, এসপ্ল্যানেড, এম জি রোড, শোভাবাজার-সুতানুটি। বেলগাছিয়া-শ্যামবাজারের মধ্যবর্তী অংশেও হবে এই কাজ। মেট্রোপথের বাদবাকি স্টেশনগুলিতে ইতিমধ্যেই রয়েছে এই ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এসি কারেন্ট বদলে যাবে মেট্রো চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় ডিসি কারেন্টে। ফলে মেট্রো রেকের মূল চালিকাশক্তি যে বিদ্যুৎ, তার সরবরাহ ব্যবস্থা অনেক বেশি আধুনিক ও মসৃণ হবে। পাশাপাশি, অগ্নিকাণ্ড সংক্রান্ত ঝুঁকি কমবে অনেকটাই। 

    এছাড়া, মেট্রোয় বিদ্যুতের জোগান দেওয়া ইস্পাতের থার্ড রেল পুরোপুরি বদলে অ্যালুমিনিয়ামের করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিদ্যুতের সুপরিবাহী অ্যালুমিনিয়ামে ঘর্ষণজনিত তাপ কম হবে। উল্লেখযোগ্য হারে কমবে বিদ্যুতের খরচ। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে ব্লু লাইনে সমস্ত মেট্রো রেকই এসিতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। নন-এসি রেক চলার সময় পাতালপথে যতটা তাপ তৈরি হতো, সবগুলি এসি রেক হয়ে যাওয়ায় তা বেড়ে গিয়েছে। যা থেকে টানেলে বিশেষ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখে ভেন্টিলেশন ও কুলিং ব্যবস্থাপনার খোলনোলচে বদলে দেওয়ার নীল নকশা তৈরি করেছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। টানেলের নির্দিষ্ট অংশে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী অ্যাক্সেল ফ্যান বসানো হচ্ছে। এছাড়াও জাপানের এক সংস্থাকে মেট্রো টানেলের ভিতরে উন্নত ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা গড়তে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে আগামীতে মেট্রো সফর আরও আরামদায়ক হবে বলেই দাবি রেল কর্তাদের।               
  • Link to this news (বর্তমান)