বিদেশের মতো ‘ডগ পাউন্ড’ এবার কলকাতাতেও, ক্রেশে বন্দি না থেকে মাঠে ঘুরবে পথকুকুররা
বর্তমান | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পথকুকুরদের অনেকে পছন্দ করেন। পাড়ার রাস্তায় থাকা লালু, ভুলু, কালু, টমিদের খেয়াল রাখতে, তাদের খানাপিনা জোগাতে ‘কুকুরদরদি’ কম নেই। কিন্তু আচমকা পাড়ার কুকুরকে পুরসভা তুলে নিয়ে গিয়ে ডগ পাউন্ডে রাখলে প্রাণীটি ভালো আছে কি না তা জানার সুযোগ থাকে না দরদীদের। কারণ আমজনতার প্রবেশ নিষেধ। সেখানে ক্রেশে বা খাঁচায় বন্দি থাকে পথকুকুররা। এই ধারণা পালটাতে এবার শহরের বুকে বিদেশের মতো খোলা আকাশের তলায় নয়া ডগ পাউন্ড বানানোর পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা। এ কাজের জন্য আপাতত দু’টি জমি দেখা হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ধাপায় গড়ে উঠতে পারে আধুনিক ডগ পাউন্ড।
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পথকুকুরের উপদ্রব এবং সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। রাস্তার কুকুরদের নির্বীজকরণ বা জলাতঙ্কের টিকাপ্রদানের কাজ কতটা করা হয়েছে তা নিয়েও আলোচনা হয়। পুর কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে, কুকুর তুলে নিয়ে গিয়ে তাদের রাখার মতো পর্যাপ্ত পরিকাঠামো পুরসভার হাতে নেই। দু’টি ডগ পাউন্ড মিলিয়ে মাত্র ২৪০টি কুকুর রাখার ক্রেশ বা খাঁচা রয়েছে। তাই নতুন জায়গা তৈরির জন্য জমির খোঁজ চলছে। এ কথা জানান কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র বা স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ। সম্প্রতি পুর প্রতিনিধিদের একটি দল ধাপায় কলকাতা পুরসভার বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের পাশে এক একরের দু’টি জমি দেখেছে। সেখানে কোনও একটিতে নতুন ডগ পাউন্ড তৈরি হবে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অনেক মানুষ কুকুরদরদী হন। বিভিন্ন সময় পাড়ার কুকুরদের চিকিৎসা করাতে বা অন্য কোনও অভিযোগ থাকলে আমরা তুলে নিয়ে এসে ডগ পাউন্ডে খাঁচায় ভরে রাখি। পরে আবার ছেড়েও দেওয়া হয়। কিন্তু খাঁচায় বন্দি থাকাটা একটি প্রাণীর পক্ষে অস্বস্তিজনক। পাশাপাশি কুকুরদরদি কেউ তাদের দেখতে চাইলে সেই সুযোগ পান না। তাই খাঁচা নয়, খোলা আকাশের নীচে মাঠের মধ্যে কুকুরগুলি থাকবে। এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াতে পারবে। সেখানেই তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হবে। মাঠের সীমানা জাল দিয়ে আটকানো। জালের বাইরে থেকে কেউ চাইলে নিজের পাড়ার প্রিয় লালু-ভুলুদের দেখে আসতে পারবেন। অতীন ঘোষ বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে তো বটেই সারাদেশের মধ্যেও এ হবে নজিরবিহীন কাজ। কারণ, দেশের কোথাও পথকুকুরদের জন্য সরকারিভাবে এমন পরিকাঠামো তৈরি হয়নি। বিদেশেও খুব কম রয়েছে। পুরসভা তেমন আধুনিক ডগ পাউন্ড বানাতে চলেছে।’