এক বিরল ঘটনার সাক্ষী রইল পান্না টাইগার রিজ়ার্ভ। শনিবার ৫৭ বছর বয়সি হাতি ‘আনারকলি’ জন্ম দিয়েছে যমজ কন্যাসন্তানের। বিশেষজ্ঞদের দাবি, হাতির যমজ সন্তান প্রসব অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এমন ঘটনা সচরাচর বন্য পরিবেশ বা সংরক্ষিত এলাকা কোথাওই দেখা যায় না। সেই কারণে রিজ়ার্ভ কর্তৃপক্ষ ও গবেষকদের মধ্যে যমজ হস্তি শাবককে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নতুন উন্মাদনা।
পান্না টাইগার রিজ়ার্ভ সূত্রে খবর, হস্তি শাবক দু'টির জন্ম হয়েছে প্রায় তিন ঘণ্টার ব্যবধানে। প্রসবের সময়ে মা হাতিটিকে কড়া পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন বন্যপ্রাণী চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের একটি দল। বর্তমানে মা ও দুই নবজাতক সকলেই সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ডঃ সঞ্জীবকুমার গুপ্ত এই ঘটনাটিকে ‘প্রকৃতির এক বিরল আশ্চর্য’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও বলেন, যে সুরক্ষিত পরিবেশেও হাতির যমজ সন্তান জন্মের ঘটনা অত্যন্ত বিরল। পান্না বিশ্ব জুড়ে বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হলেও এখানে হাতিও রয়েছে। আনারকলির যমজ শাবকের জন্ম দেওয়ার পরে পান্নায় হাতির সংখ্যা এখন বেড়ে হয়েছে ২১।
পান্না টাইগার রিজ়ার্ভের ফিল্ড ডিরেক্টর নরেশ সিং যাদব জানিয়েছেন, মা হাতি ও তার দুই শাবকদের জন্যে বিশেষ যত্নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আনারকলিকে বর্তমানে অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হচ্ছে। তালিকায় রয়েছে রয়েছে গুড়, আখ এবং ঘি দিয়ে তৈরি লাড্ডু। নবজাতকদের খাওয়ানো ও পরিচর্যার জন্য একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে, যাঁরা ২৪ ঘণ্টার নজর রাখবে তাদের উপর।’
১৯৮৬ সালে সে আনারকলিকে পান্নায় নিয়ে আসা হয়। এর আগে সে ছয়টি শাবকের জন্ম দিয়েছে। পান্নার সুরক্ষা ও টহলদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আনারকলি। বনকর্মীরা জানিয়েছেন, চোরাশিকারি বা অবৈধ কাঠুরেদের উপস্থিতি টের পেলেই আনারকলি তৎক্ষণাৎ তার তীক্ষ্ণ বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করে জানান দেয়। কখনও কখনও চোরাশিকারিদের ভয় দেখানো, আবার কখনও শুঁড় দিয়ে পাথর ছুঁড়ে মারে তাদের। এমনকী, বর্ষার সময়ে যখন রাস্তাঘাট দুর্গম হয়ে ওঠে, তখন আনারকলি-সহ একাধিক হাতি বাঘেদের ট্র্যাকিং, এলাকা পর্যবেক্ষণ-সহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ দক্ষতার সঙ্গে করে থাকে।