• আদিবাসীদের এনিউমারেশন ফর্ম পূরণে সক্রিয় পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকও
    এই সময় | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, আসানসোল: শিল্পাঞ্চলের একাধিক ব্লক এবং আসানসোল পুরসভা এলাকায় রয়েছেন বড় অংশের উর্দুভাষী, আদিবাসী এবং হিন্দিভাষী মানুষ। স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন প্রক্রিয়ার সূত্র ধরে এ বার এঁরাও পূরণ করছেন এনিউমারেশন ফর্ম। সমস্যা হলো, এই অংশের মানুষ স্পষ্ট করে বুঝতে পারছেন না, ফর্মের কোন অংশে কী ধরনের তথ্য দিতে হবে। সেই সমস্যা দূর করতে ফের পথে নামলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস পোন্নমবলম। সঙ্গে ছিলেন মহকুমাশাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য।

    রবিবার জেলাশাসক এবং মহকুমাশাসক সেই অঞ্চলগুলি ঘুরে দেখেন। কথা বলেন বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের সঙ্গেও। উত্তর আসানসোল রেলপারের সংখ্যালঘু মহল্লা থেকে কুলটি, সর্বত্র তাঁরা খতিয়ে দেখেন, 'সার' প্রক্রিয়া কতটা মসৃণ ভাবে এগোচ্ছে। শুধু তাই নয়। উর্দু এবং হিন্দিভাষী মানুষদের ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রে সেই ভাষায় কথা বলতে দক্ষ সহায়কদের নিয়েই ঘোরেন এই দুই আধিকারিক। তার সঙ্গে বুথ লেভেল অফিসাররা (বিএলও) হিন্দি এবং উর্দুভাষায় ছাপানো ফর্মের কোন জায়গায় কী পূরণ করতে হবে, তা-ও লিখে নিয়ে গিয়ে বোঝান তাঁদের। তাতে সমস্যা কিছুটা কেটেছে।

    যদিও আসানসোলের মহকুমাশাসক মনে করেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের ভোটারদের কাছে তাঁদের ভাষায় কথা বলার মতো লোকের বেশি সংখ্যায় প্রয়োজন রয়েছে। উত্তর আসানসোল বিধানসভার ১৩ এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এমন ৩২টি এলাকা আছে, যেগুলি সম্পূর্ণ আদিবাসী অধ্যুষিত। এর মধ্যে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিলপাড়া, দাসপাড়া, পার্শ্ববর্তী রামপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষদের নিয়ে তিনি কয়েক ঘণ্টা ধরে বোঝান, কী ভাবে আবেদনপত্রগুলি পুরণ করতে হবে। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দপ্তরের আধিকারিক লক্ষ্মীপদ সরেন এবং অনুজ চক্রবর্তী।

    সেখানকার বর্তমান কাউন্সিলার উৎপল সিনহা এবং প্রাক্তন কাউন্সিলার নরেন্দ্র কুমার মুর্মু জানান, তাঁরা আদিবাসীদের কথ্য ভাষায় কী ভাবে ফর্ম পুরণ করতে হবে, সে বিষয়ে সাহায্য করেছেন। মণিলাল হাঁসদা, রসিক হাঁসদা-সহ স্থানীয় মোড়লরাও মহকুমাশাসকের কাছে গিয়ে তাঁদের ভাষায় গোটা বিষয়টি বুঝে নেন। মোড়লরা এ-ও জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই নানা ধরনের ফর্মে সই করিয়ে জমি প্রতারণার ঘটনাও ঘটেছে। তাই তাঁরা এনিউমারেশন ফর্ম হাতে পাওয়ার পরে তা পূরণ করার ক্ষেত্রে সময় নিচ্ছিলেন। মহকুমাশাসকের কাছে গোটা বিষয়টি বোঝার পরে আর কোনও সমস্যা নেই। এই অঞ্চলেই এমএ পাশ করা সুরজ মুর্মু নিজে একাধিক এনিউমারেশন ফর্ম পূরণে সহায়তা করেছেন।

    সালানপুরের বাথানবাড়ি থেকে শুরু মালবহাল পর্যন্ত অন্তত ৪০টি জায়গায় আদিবাসী পাড়াগুলিতেও একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এখানকার আদিবাসী নেতা জয়েশ হাঁসদা বলেন, 'আমরাও বিডিও সাহেবের নির্দেশে নিজেদের ভাষায় গোটা বিষয়টি বাকিদের বুঝিয়ে দিচ্ছি।' এ ছাড়াও এখানে আমাদের এখানে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মহম্মদ আরমান ও সহ-সভাপতি বিজয় সিং আদিবাসীদের ভাষা জানেন। তাঁরাও ভোটারদের ফর্ম পূরণে সহায়তা করছেন।

  • Link to this news (এই সময়)